চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা চান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন

প্রাণতোষ তালুকদার

চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা চান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এবং এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সকল নাগরিকের সক্রিয় সহযোগিতাও প্রয়োজন বলে মনে করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
৩ জুলাই ২০১৮ তারিখ রাজধানী ঢাকার ৩৮ নং ওয়ার্ডে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে স্থানীয় কাউন্সিলর-এর সহযোগিতায় কাউন্সিলর অফিসের ওয়ার্ড সেক্রেটারি উত্তম বাবু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সাথে নিয়ে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঝোপঝাড় এবং আঙিনায়, ফুলের টবে এবং ড্রেনে মশার ঔষধ ছিটিয়ে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতার সৃষ্টি করছেন এবং এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সকল নাগরিকের সক্রিয় সহযোগিতা চেয়েছেন। ওয়ার্ড থেকে প্রতিটি লোকের নিকট লিফ্লেট বিলি করা হচ্ছে। লিফলেট-এ লেখা আছে যে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগ কি? চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগ ভাইরাসজনিত জ্বর। এডিস মশা চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরের একমাত্র বাহক। এই মশার কামড়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ছড়ায়। এডিস মশা সাধারণত ভোরে এবং সন্ধ্যায় কামড়ায়।
চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গজ্বর প্রতিরোধে করণীয় ঃ এডিস মশা পরিষ্কার বদ্ধ পানিতে জন্মে। বাড়ির আশেপাশের ঝোপঝাড় এবং আঙিনায় যাতে পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখুন। অব্যবহৃত গাড়ির টায়ার, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত চৌবাচ্চা, পরিত্যক্ত টিনের কৌটা, কাঁচ/প্লাষ্টিকের বোতল/ক্যান, বিস্কুট ও চিপস এর প্যাকেট, গাছের কোটর, পরিত্যাক্ত বা ভাঙ্গা হাড়ি, ডাবের খোসা ইত্যাদিতে ৫ (পাঁচ) দিনের বেশি যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন এবং প্রয়োজনে অপসারণ করুন। বালতি, ড্রাম, ফুলের ও গাছের টব, ফ্রিজ এবং এয়ার কন্ডিশনারের নীচের পানি কোনভাবেই যেন একনাগাড়ে ৩ (তিন) দিনের বেশি না জমে থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। দিনে অথবা রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করুন।
চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ লক্ষণ ঃ জ্বর (শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ বৃদ্ধি পায়। মাথা ব্যথা, চোখের পিছনে ব্যথা, মাংসপেশী ও হাড়ে ব্যথা, বমি অথবা বমি-বমি ভাব। শরীরে হামের মত দানা দেখা দেয়। চিকুনগুনিয়া জ্বরের ক্ষেত্রে অস্থি ও অস্থি সন্ধিতে হাড়ে ও হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা হয় এবং অস্থি সন্ধি ফুলে যেতে পারে।
চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরের ব্যবস্থাপনা ঃ অধিকাংশ ক্ষেত্রে জ্বর ৭ দিনের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায়। রোগীকে উপসর্গ অনুসারে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে এবং বিশ্রামে রাখতে হবে। প্রচুর পানি ও তরল খাবার খাওয়াতে হবে। দ্রুত জ্বর কমানো একান্ত জরুরী। এজন্য মাথা ধোয়া, ভেজা কাপড় দিয়ে গা মোছা এবং প্যারাসিটামল খেতে দেয়া যায়। ব্যথার স্থানে ঠা-া সেঁক দেয়া যেতে পারে। মারাত্মক (হেমোরেজিক) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে রোগীকে অবিলম্বে হাসপাতালে/ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।
চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীর আর্থলজিয়া/আর্থাইটিস (অস্থি সন্ধিতে ব্যথা/ফুলে যাওয়া) বা কোন জটিলতা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে বলেছেন। ২৮টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৫টি নগর মাতৃসদন ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত ২টি হাসপাতাল ও ১টি মাতৃসদনে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগের পরামর্শ ও সেবাকেন্দ্রে এসে সেবা নিতে বলেছেন।