নাস্তিক্যবাদ : ভণ্ডদের ভণ্ডামির ফুলস্টপ ( শেষ পর্ব) । অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়

follow-upnews
0 0

“যুক্তিবাদ” বাজারজাত কোনো ট্যাবলেট নয় এবং তা সেবনপূর্বক “যুক্তিবাদী” হওয়া যাবে না। যুক্তিবিদ্যায় সমস্ত যুক্তিকে মূলত দু-ভাগে ভাগ করে নেওয়া যায় । ছাঁচে ঢালা বা ফর্মাল যুক্তি এবং ছাঁচহীন বা ইনফর্মাল যুক্তি । ছাঁচে ঢালা যুক্তি হল গণিতের মতো ব্যাপার । বেশি তত্ত্ব কথা না-বুঝেও বোধগম্য হয় । ছাঁচে ঢালা যুক্তির বৈধতা বা অবৈধতাও নির্ণয় করা যায় কয়েকটি সূত্র প্রয়োগ করে, ঠিক গণিতের মতোই । কিন্তু ছাঁচহীন বা ইনফর্মাল যুক্তি এরকম নয়। সাধারণ মানুষের কথায় প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত হওয়া এই ধরনের যুক্তিকে গণিতের মতো একে ছাঁচে ঢালা যায় না । সহজে সূত্র প্রয়োগে উত্তর বেরোয় না।

যুক্তি নয়, আস্তিকবাদীগণ বিশ্বাসকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তাই বলেন, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর”। মূলগতভাবে আস্তিকগণ মস্তিষ্ক-অলস মানুস, তাঁরা যুক্তিতর্ক করে বহুদূর যেতে পছন্দ করেন না। চোখ বন্ধ রেখে ইমাজিন করে নিতে ভালোবাসেন নিজের মতো করে। তারপর সেটাকেই ফ্রেমবন্দি করে “ধ্রুবসত্য” বলে প্রচার করবেন। কারণ যুক্তিতর্ক করে বহুদূর যেতে হলে মস্তিষ্ককে ব্যতিব্যস্ত করে তুলতে হয় – প্রতিনিয়ত, প্রতিক্ষণ। তদুপরি আরও বলা যায়, বিশ্বাস কখনো একা একা পথ চলে না, বগলদাবা করে বয়ে নিয়ে বেড়ায় প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মকেও। তাই বিশ্বাসের কথা বলতে গেলে পাশাপাশি অবধারিতভাবে ধর্মের কথাও এসে পড়ে। বিশ্বাস এবং ধর্ম অনেকসময়ই খুব পরিপূরক, অনেকসময় কেন — সবসময়ই। অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে সেখানে জাদুটোনা থেকে শুরু করে নরবলি, কুমারীহত্যা সহ হাজারো অপবিশ্বাসের সমাহার। সেদিক থেকে চিন্তা করলে নাস্তিকতা, যুক্তিবাদ, বিজ্ঞানমস্কতা, লিবারেলিজম প্রভৃতি উপাদানগুলি বিবর্তনীয় প্রেক্ষাপটে মানবসমাজের জন্য অপেক্ষাকৃত নতুন সংযোজন। গবেষণায় দেখা গেছে, অবিশ্বাসীরা স্মার্ট শুধু নয়, নৈতিক দিক দিয়েও অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদের চেয়ে অনেক অগ্রগামী। নাস্তিক এবং প্রগতিশীল পরিবারে শিশু নির্যাতন কম হয়, তারা নারী নির্যাতন কম করে থাকে, তাদের পরিবারে বিবাহবিচ্ছেদের হার কম, তারা একগামী সম্পর্কে আস্থাশীল থাকে, তারা পরিবেশ সচেতন থাকে ধার্মিকদের চেয়ে ঢের বেশি। সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিষ্ণুতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকারের প্রতি সচেতনতাও বিশ্বাসীদের তুলনায় নাস্তিকদের মধ্যে অনেক বেশি। কারণ অবিশ্বাসীরা সাধারণত বৈজ্ঞানিক যুক্তি, মানবতা এবং বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে বিষয়গুলি বিবেচনা করেন, কোনো অন্ধবিশ্বাসের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে নয়। বিশ্বাস শুধু মানসিকভাবেই ব্যক্তিকে পঙ্গু এবং ভাইরাস আক্রান্ত করে ফেলে না, পাশাপাশি এর সার্বিক প্রভাব পড়ে একটি দেশের সামাজিক কাঠামোয়, রাষ্ট্রব্যবস্থায় এবং তদুপরি অর্থনীতিতেও। সাম্প্রতিক বহু গবেষণায়ই বেরিয়ে এসেছে যে দারিদ্রের সঙ্গে ধর্মবিশ্বাসের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ আছে। যেসব দেশ যত দারিদ্রক্লিষ্ট, সেসব দেশেই ধর্ম নিয়ে বেশি নাচানাচি হয়, আর শাসকেরাও সেসব দেশে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। সেজন্যই দারিদ্র্যক্লিষ্ট তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ধর্ম খুব বড়ো একটা নিয়মক হয়ে কাজ করে থাকে, সবসময়েই। কিংবা ব্যাপারটাকে যদি উলটো করেও দেখি তাহলে দেখব – ধর্মকে অতিরিক্ত প্রশ্রয় দেওয়া, কিংবা লম্ফঝম্ফ করা, কিংবা জাগতিক বিষয়-আশয়ের চেয়ে ধর্মকে মাত্রাতিরিক্ত বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণেই সে সমস্ত দেশগুলি প্রযুক্তি, জ্ঞানবিজ্ঞানে পচ্ছাদগামী এবং সর্বোপরি দরিদ্র। বিশ্বাস একটা একান্ত ব্যক্তিগত আবেগ এবং অনুভুতির বিষয়। মানুষ বিশ্বাস তখনই করে, যখন ধারণাকে প্রমাণ করতে পারে না বা প্রমাণ করতে চায় না। মনে করেন আমি বললাম যে আমার কাছে কোনো টাকা নেই এবং আপনি চাইলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। আপনি যদি পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে পরীক্ষার পর এটা প্রমাণ হয়ে যাবে আমার কাছে টাকা আছে কি নাই, বিশ্বাসের আর কিছু নেই। আর যদি বিশ্বাস করেন, তার পিছনে যত কারণই থাক-না-কেন ফাঁকির একটা সম্ভাবনা থেকেই যাবে। আজকাল শিক্ষিত মানুষগণ চোখের গঠন, নাকের গঠন মার্কা ভুয়া যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে “ঈশ্বর” আছে। তারা এটা বোঝেন না যে যখন তারা বলে তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, এই বিশ্বাস শব্দটাই প্রমাণ করে যে তাদের কাছে কোনো প্রমাণ নেই এবং এই বিশ্বাসটা সত্যি না-হওয়ারও একটা সম্ভাবনা সবসময়ই আছে। এই ফাঁকির সম্ভাবনাটা গ্রহণ করার অক্ষমতাটার কারণেই বিশ্বাস হয়ে যায় অন্ধবিশ্বাস। এবং এই অন্ধবিশ্বাসই তাদের বানিয়ে দেয় ধর্মান্ধ। বিশ্বাসের আর-একটা ব্যাপার হল আপনি বিশ্বাস না-করেও বলতে পারেন যে আপনি বিশ্বাস করেন। আপনি চাইলে একই সঙ্গে বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস দুটোই করতে পারেন। যখন আমি বলেছি যে আমার কাছে কোনো টাকা নেই এবং আপনি চাইলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন, আপনি হয়তো ভদ্রতা করে পরীক্ষা করলেন না। এই ক্ষেত্রে আপনি বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস দুটোই একই সঙ্গে করতে পারেন। আপনার একটা অংশ বিশ্বাস করতে পারে আমার কাছে টাকা নেই, পাশাপাশি আপনারই আর-একটা অংশ বিশ্বাস করতে পারে যে আমার কাছে টাকা আছে আমি শেয়ার করব না। এই ব্যপারটা স্বাভাবিক। যেটা স্বাভাবিক না সেটা হচ্ছে আপনি যখন পুরাপুরি বিশ্বাস না-করে বলেন বিশ্বাস করেন। এটা হচ্ছে নিজের সাথে প্রতারণা, ভণ্ডামির উৎস।

পৃথিবীতে প্রচলিত সমস্ত ধর্মগুলোর সত্যিই কি কোনো ভিত্তি আছে ? যেখানে জন্মসূত্রে আমরা ধর্মগুলোকে পাই সেখানে ঈশ্বর মনোনীত ধর্ম পাওয়া স্রেফ ওই ঈশ্বর মনোনীত ধর্মের একজন পুরুষের সন্তান উৎপাদনের সঙ্গে যোগসূত্র। একজন হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ আর ইহুদি হওয়ার মধ্যে জন্মসূত্রই প্রধান। মহান ঈশ্বরের মনোনীত ধর্মের ডাকে সাড়া দেওয়ার অন্য কোনো উপায় নেই। ধর্মগ্রন্থের ধর্মবিধান মানুষ দ্বারাই সৃষ্ট। প্রাচীন কালে এই ধর্মগ্রন্থই ছিল অনুশাসনের জন্য একমাত্র সংবিধান।ধর্মগ্রন্থের উপর ভিত্তি করেই চলত দেশশাসন।এই ধর্মগ্রন্থগুলি অপৌরুষেয় তথা ঈশ্বর প্রেরিত দূত দ্বারা প্রেরণ করা হয়েছে বলে যে গল্প শোনানো হয়, তা অমূলক নয়। সেসময়ের ধর্মীয় নেতা তথা শাসকগণ অনুশাসনের গ্রন্থগুলি রচনা করে অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন। নাহলে সমাজে সভ্যতার বিকাশ সম্ভব হত না। মানুষ চরম উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়ত। এক অরাজকতার পরিস্থিতি বিরাজ করত সমগ্র পৃথিবীতে। চলত হানাহানি, খুনোখুনি। সভ্যতার বিকাশের বিকাশ ও বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এক সুসংঘটিত রাষ্ট্রের সৃষ্টি হল। রচিত হল শাসনতন্ত্রের সুদৃঢ় এবং আধুনিক সংবিধান। এই অনুশাসনে কোনো ধর্ম নেই, ঈশ্বর নেই। ঈশ্বরের আশীর্বাদ নেই, অভিসম্পাত নেই। অলৌকিক স্বর্গের সুখ, নরকের যন্ত্রণার কথা বলা হয়নি। বেদ, মনুসংহিতা, কোরান, হাদিস, বাইবেল, ত্রিপিটক – এসব গ্রন্থগুলির অনুশাসনগুলি আজ খুবই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। ধর্মের অনুশাসন এবং রাষ্টের অনুশাসন দুটোই একসঙ্গে চলতে পারে না। ধর্মের বিধান নয়, রাষ্ট্রের পেনাল কোডই গ্রহণযোগ্য। ধর্মীয় অনুশাসন বর্বরোচিত, অমানবিক, বিভেদকামী, দুষ্পরিবর্তনীয় — যা আজকের দিনে সম্পূর্ণভাবে অচল। রাষ্ট্রের আইনব্যস্থা যখন যথেষ্ট সম্পূর্ণ, তখন সমাজে ধর্মীয় অনুশাসন অবাঞ্ছিতই !

ঈশ্বর যে কোনো ধর্ম পৃথিবীতে পাঠাননি সমগ্র পৃথিবীর জন্য এটা একটা প্রধান প্রমাণ। পৃথিবীতে যদি ঈশ্বর কোনো ধর্ম পাঠিয়ে না-ই থাকেন, তিনি যদি আদৌ আমাদের নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা না-ই করেন, তাহলে একজন ঈশ্বর আছেন এটা বিশ্বাস করেই-বা কী লাভ ? তবে ঈশ্বর যে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে কোনো ভূমিকা রাখেন না। হাত নাড়লে খেতে পাবেন, না-নাড়লে ভুখা থাকতে হবে। এটা যত তাড়াতাড়ি মানুষ বুঝবে তত তাড়াতাড়ি মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে কথিত ঈশ্বর প্রেরিত ধর্মের প্রভাব থেকে দূরে থাকবে। রাষ্ট্রীয় জীবনে ধর্মের ব্যবহারের মারাত্মক দিকটি থেকে চিরমুক্তি পেতে পারে। এই আস্তিকতা যত তাড়াতাড়ি পৃথিবীতে প্রসার লাভ করবে আমাদের কাঙ্খিত শান্তির পৃথিবীর আশা ততই বাড়তে থাকবে। ঈশ্বর অনেক ব্যাপক বিতর্কের বিষয়। পৃথিবীতে এমন মানুষের সংখ্যা অনেক আছেন যাঁরা ঈশ্বর বিশ্বাস করলেও প্রচলিত ধর্ম মানেন না। তাঁরা নিজেদের আস্তিক বলেই পরিচয় দেয়। এঁরা স্বর্গ-নরক-জাহান্নম-জন্নত নিয়ে মাথা ঘামায় না।প্রচলিত ধর্ম যেহেতু মানেন না, তাই ধর্মাচরণ করে অন্য মানুষকে বিব্রত করেন না। ঈশ্বরের বিশ্বাস ও প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত হলেও মোটেই এক নয়। ঈশ্বর আছে কি নেই তার সঙ্গে ধর্ম সঠিক না বেঠিক বিতর্কের সংযোগ সামান্য। যদিও দুটিই মানুষ কর্তৃক সৃষ্ট, তা সত্ত্বেও বলব ধর্মকে নিয়ে বিতর্ক করা যেতে পারে, কিন্তু ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে তর্ক রা মানে ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে গাত্র ব্যথা করা। ঈশ্বর নিরাকার বিষয়, ধর্ম চর্চিত এবং রচিত বিষয়। ঈশ্বর ব্যক্তিগত স্বার্থের বিষয়, ধর্ম সমষ্টিগত স্বার্থের বিষয়। ধর্ম সমালোচক মানেই আমাদের সমাজে অবধারিতভাবে নাস্তিক কিংবা অন্য ধর্মের ছদ্মবেশী এজেন্ট। চুড়ান্তভাবে ঈশ্বর আছে কি নেই এসব চিন্তা করে পেট ভরবে না। ধর্মগ্রন্থগুলি তথাকথিত ঈশ্বরের সৃষ্টি, যে যতই বুক বাজিয়ে বলুক-না-কেন। কারণ ধর্ম যদি ধর্ম যদি ঈশ্বরের সৃষ্টিই হত এত বিভিন্নতা থাকত না। বিভিন্নতা থাকলেও অবিবেচক হতেন না। ঈশ্বর যদি ধর্মগ্রন্থগুলি লিখতেন বা প্রেরণ করতেন, তবে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ ইত্যাদি হাজারো ধর্মমত তৈরি হত না। তাহলে বলতে হয় এ পৃথিবীতে যত ধর্ম সংক্রান্ত বিড়ম্বনা হয়, সবকিছুর জন্য ঈশ্বরই দায়ী। ধর্মগ্রন্থগুলির বিধান যদি ঈশ্বরের নির্দেশ হয়, সেই ঈশ্বর মোটেই বিচক্ষণ নয়, বিবেচক নয়। গোরু যদি ভারতের দেবতা হয়, তবে তা এখানে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ভক্ষ্যণীয় হত না। একই পৃথিবীতে একই জিনিস এক গোষ্ঠীর কাছে দেবতা, অন্য গোষ্ঠীর কাছে খাদ্য হত না। এক গোষ্ঠীর কাছে পাপ, অন্য গোষ্ঠীর কাছে সুন্নত হত না। আরবের জীবনযাত্রা গড়ে উঠেছে মরুভূমি এবং সেখানকার জলবায়ুর উপর। এই সত্য পৃথিবীর সমস্ত ভূখণ্ডের জন্যই। ভৌগোলিক কারণেই সেই অঞ্চলের মানুষদের পোশাক নির্দিষ্ট হয়। তাই আরবের নারী-পুরুষনির্বিশেষে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা পোশাক পরতে হয়। সে নিয়ম অন্য কোনো দেশের মানুষদের জন্য প্রযোজ্য নয়। কোনো ধর্মগ্রন্থে যদি এইরকম নির্দেশ থাকে তাহলে বুঝতে হবে সেই ধর্মবেত্তাদের বিচক্ষণতার অভাব আছে। ভারতে মরু-জলবায়ুর কারণে রাজস্থানেও এরকম পোশাক পরার প্রচলন আছে। রাজস্থানের মানুষ যে ধরনের পোশাক পরিধান করেন সেই ধরনের পোশাক পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পরিধান করতে পারে না। পোশাক ধর্মীয় কারণে নয়, ভৌগোলিক কারণেই নির্ধারিত হয়।

যন্ত্রণাক্লিষ্ট মানুষের কাছে ঈশ্বরের বিশ্বাস মানসিক শান্তির জন্য দরকার হতে পারে, তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সেই ব্যক্তিগত বিশ্বাসটা অন্যের ঘাড়ে ছলেবলেকৌশলে চাপিয়ে দেওয়াটা ঘোরতর অন্যায় কাজ।নাস্তিকগণ আপনার ঈশ্বর-ভাবনায় একমত হবেন কেন ? আপনি যেভাবে ঈশ্বরকে নিয়ে নাস্তিকরা সেভাবে ভাবেন না। নাস্তিকরা মনে করেন ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করেছেন বলেই ঈশ্বর মানুষের মতো দেখতে। গোরু, সাপ, ডাইনোসোরাসরা যদি ঈশ্বর সৃষ্টি করত তাহলে তাদের ঈশ্বর তাদের মতোই দেখতে হত।মানুষের ঈশ্বর মানুষসহ দু-চারটি প্রাণী ছাড়া আর কোনো প্রাণীরই খবর জানেন না।অথচ জলে-স্থলে-অন্তরিক্ষে সব মিলিয়ে কোটি কোটি প্রাণীর অস্তিত্ব আছে।তাদের ব্যাপারে ঈশ্বর এবং ধর্মগ্রন্থ কিছুই উল্লেখ করেননি।সেটা নিশ্চয়ই নির্মাতাদের সংকীর্ণ জ্ঞানের কারণেই। কে যে বলেছিলেন — ‘যে মানুষ সর্বপ্রথম ঈশ্বরের ধারণার জন্ম দিয়েছিল সে জগতের শ্রেষ্ট বাটপার’।

অনেকেই নাস্তিক এবং নাস্তিকতাকে দেশের ও সমাজের পক্ষে সর্বনাশা বলে মনে করেন। নিত্যনতুন অভিযোগ শোনা যায় নাস্তিকদের বিরুদ্ধে। বলেন অমুকে নাস্তিক ছিল সে এই ওই করেছে, সুতরাং নাস্তিকেরা খারাপ। কিন্তু আরও দশজন নাস্তিক যদি উপকার করে থাকেন তাহলেও সে নিয়ে কোনো বিশেষ উচ্চবাচ্য নেই। তাছাড়া নাস্তিক হলেই যে তাকে ষড়রিপু (কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য ) থেকে মুক্ত হতে হবে এমন দোহাই তো কেউ দেননি। নাস্তিকও দোষেগুণে মানুষ, সেটাই স্বাভাবিক। একজন আস্তিকের মতো নাস্তিকেরও কিছু মৌলিক অধিকার আছে এবং থাকব। বেঁচে থাকার জন্য সব রকমের লড়াই আস্তিকের মতো নাস্তিকেরও থাকবে। নাস্তিক মানে তো এই নয় যে আপনি এক গালে চড় মারলে আর-এক গাল পেতে দেবে আর আর–একটা চড় খাওয়ার জন্য।বরং যেটা স্বাভাবিক সেটাই হতে পারে – ইট খেয়ে পাটকেল ফেরত দিতে পারে। সবচেয়ে বড়ো কথা, নাস্তিকরা যাই-ই করুক তা ঈশ্বরের নামে বা ধর্মের নামে করেন না। তাঁরা যাই-ই করুন না-কেন সব দায় নিজের কাঁধেই নেবেন, ঈশ্বর বা ধর্মের কাঁধে চাপাবেন না।একটা ঘটনা বলি।

ঘটনাটি কলকাতার। কলকাতার নাদিয়াল থানা এলাকার বাগদি পাড়ায়। নাদিয়াল থানা এলাকার বাগদি পাড়া রিকশা স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে উত্তেজিত গলায় কথা বলছিল এক যুবক আর এক মহিলা। অন্য আর এক মহিলা ওই দু’জনকে প্রাণপণ কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। হঠাৎই যুবক পোশাকের মধ্যে থেকে একটা তলোয়ার বার করে মহিলার গলায় বসিয়ে দিল কোপ। ধড় থেকে আলাদা হয়ে মাথাটা ছিটকে পড়ল রাস্তায়। খোলা তলোয়ারের সামনে এগোবে কে? যুবক তখন চিৎকার করে বলছে, ‘‘এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। কেউ এগোলে গর্দান নামিয়ে দেব।’’ তুঁত-রঙা সালোয়ার-কামিজ পরা ধড় রাস্তাতেই পড়ে রইল। ডান হাতে মুন্ডুটা ঝুলিয়ে নিয়ে হাঁটা শুরু করল সৌম্যদর্শন যুবকটি। বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পরিবারের সম্মানহানি করার দায়ে নিজের বোনকে এই ভাবে শাস্তি দিল দাদা। বোনের বয়স ২৪, নাম নিলোফার বেগম। দাদার নাম মেহতাব আলম (২৮)। মেহতাব বোনের মুণ্ডু আর তলোয়ার হাতে নিয়ে পুলিশের কাছে ধরা দেয়। এই ঘটনায় স্থানীয় ধর্মবেত্তারা বললেন, “এটা কোনো অন্যায় কাজ নয়। এর মধ্যে কোনো অন্যায় দেখি না। আমাদের ধর্মে নাজায়েস সম্পর্কের কারণে পরিবারের সন্মান রক্ষার্থে এমন কাজ করা যায়।এই কর্তব্য পালন করার জন্য মেহতাবের বেহেস্তে জায়গা হবে”।

একইরকম আর-একটি ঘটনা। এটি পাকিস্তানের সংঘটিত হয়েছে। লাহোরে পারিবারিক সম্মান রক্ষার কথা বলে গত মঙ্গলবার মা ও দুই বোনকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুই যুবক। জানা গেছে, হাতে কোনো মজবুত প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও সৎ দুই বোন আমেনা আর মুক্কাদাসকে নিয়ে মারাত্মক সন্দেহে ভুগতেন কুড়ির কাছাকাছি বয়সের দুই ভাই। বোনেদের নানাভাবে সতর্ক করার পরও নাকি তারা সংশোধন হননি। উপরন্তু মা সুঘরার প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়-আশ্রয় পেয়ে দিন দিন তাদের অবাধ্যতা বেড়েই চলেছিল। এর উপর ছিল মহল্লার তরুণদের টিকা-টিপ্পনি। বন্ধুরাও কথায় কথায় দুই তরুণীকে নিয়ে হর-হামেশাই রসালো আলোচনায় মেতে উঠত। আর এসব দেখে-শুনে শরীরের রক্ত ফুটে উঠত ভাইদের। শেষপর্যন্ত যাবতীয় বিড়ম্বনার হাত থেকে রেহাই পেতে হত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নেন তারা। মঙ্গলবার ভোররাতে ঘুমন্ত পঞ্চাশোর্ধ্ব মা এবং দুই যুবতী বোনের গলা ছুরির কোপ বসিয়ে দেয় ওই দুই যুবক। এ ঘটনাও কি ধর্মীয় নির্দেশ পালন করল যুবকটি ?

তৃতীয় ঘটনাটি পড়ুন। ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। তান্ত্রিকের কথায় বিপুল ধন-সম্পদ ও সুখ আর সমৃদ্ধির জন্য নিজের মাকে বলি দিয়েছে দুই ভাই। মাকে হত্যার দায়ে ওই দুই ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তান্ত্রিক পলাতক রয়েছে। ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিকে এ ঘটনা ঘটেছে। থানে জেলার ডানডায়াল গ্রামের কাশীনাথ ডোরে এবং গোবিন্দ্র ডোরে এক মহিলা তান্ত্রিক বাচুবাই খড়কের কাছে যায়। তান্ত্রিক দুই ভাইকে ভগবানকে খুশি করার জন্য নিজের মাকে বলি দেওয়ার কথা বলে। কাশীনাথ ও গোবিন্দ্র তান্ত্রিকের কথায় প্রলুব্ধ হয়ে নিজের মা বুধিবাই ডোরেকে হত্যা করে। ঘটনাটি ঘটলে সম্প্রতি নিহত মা বুধিবাই ডোরের মেয়ে একটি সামাজিক সংস্থার কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করে। মাকে হত্যাকারী দুই ভাই জানায়, তান্ত্রিকের কথামতো মাকে হত্যা করার পর সব ধরনের চেষ্টা করার পরও ধনী হতে পারিনি। তারা জানায়, তান্ত্রিক বলেছিল আমাদের মা-বোন ডাইনি এবং তাদের জন্য আমাদের ধন-সম্পদ হচ্ছে না। নাস্তিকগণ এ ধরনের বিশ্বাস পোষণ করেন না। নাস্তিকগণ এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত করবেন অবিশ্বাসের কারণেই। খুব অন্যায় হবে কী !

আস্তিকগণদের মধ্যে কেউ কেউ বলে থাকেন নাস্তিকদের কোনো জীবনদর্শন থাকে না। জীবনদর্শন ? সেটা কেমন দেখতে ? সেটা আস্তিক-নাস্তিক ভাবনার উপর নির্ভর করে নাকি ? যে জীবনদর্শন মানুষ ধর্মগ্রন্থ পাঠ করে আয়ত্ত করে, বা যে আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা ধার্মিকেরা অর্জন করে থাকে – নাস্তিকেরা তাকে নিশ্চয়ই অপছন্দ করে। তাই বলে নাস্তিকদের জীবনদর্শন নেই এটা বলা যায় না। ধর্মগ্রন্থ পড়লেই জীবনদর্শন লব্ধ হয় না। জীবনদর্শন উপলব্ধির বিষয়। জীবনদর্শন অর্জনের বিষয়। জীবনদর্শন বোধের বিষয়। জীবনদর্শন জীবনচর্চার বিষয়। বলা যায় নাস্তিকেরা প্রকৃতই জীবনদর্শন অর্জন করে থাকে। আস্তিকদের জীবনদর্শন মানেই তো পরকালের প্রস্তুতিমাত্র। জীবনদর্শনের মানে যদি এই হয় নিজেকে পরলোকে ভালো অবস্থানের বা স্বর্গলাভের জন্য প্রস্তুত করা, তাহলে সেই জীবদর্শনকে নাস্তিকরা জীবনদর্শন বলে না। বলে পরলোকদর্শন। তাই নয় কি ? নাস্তিকেরা কোনো তত্ত্বের ব্যাখ্যার জন্য কাল্পনিক বা পূর্বপরিকল্পিত সর্বশক্তিমানের সাহায্য নেয় না। তাঁরা সেই তত্ত্বকে বাস্তবের মাটিতে রেখে পর্যবেক্ষণলব্ধ সূত্র থেকে ব্যাখ্যার চেষ্টা করে।

নাস্তিক্যবাদ কি একটা ফ্যাশনমাত্র ? এমন কথা আস্তিকগণরা বলেন বইকি ! আমি নই, জবাব দিয়েছেন নাস্তিক্যবাদী শুভজিৎ ভৌমিক। শুভজিৎ বলছেন, “মানুষের বিশ্বাস যদি হয় ফ্যাশন বিচারের মাপকাঠি, তাহলে ইসলাম একটা ফ্যাশন, হিন্দুধর্ম একটা ফ্যাশন এবং পৃথিবীর যাবতীয় বিশ্বাস হচ্ছে ফ্যাশন। সেই অনুযায়ী, আপনি যদি ধর্ম পালন করে ফ্যাশন দেখাতে পারেন, তাহলে আমি ধর্ম পালন না করে ফ্যাশন দেখাতে পারবো না কেন ? না মানে, বলতে চাইছি এটা বাকি সবার চেয়ে আলাদা হওয়ার একটা চেষ্টা, তাই না ? নির্দিষ্ট ধর্ম পালনই হচ্ছে আসলে মানুষের চেয়ে আলাদা হওয়ার চেষ্টা। আপনি একটি ধর্ম গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে ওই ধর্মটি বাদে পৃথিবীর বাকি ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা হয়ে গেলেন, তাই নয় কি ? শুধু তাই নয়, এটা আপনাকে একেবারেই আলাদা করে দেবে। এক ধর্মের বিশ্বাসের সঙ্গে আর-এক ধর্মের বিশ্বাসে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। এক ধর্ম অন্য ধর্মকে বাতিল করে দেয় এবং অন্য ধর্মাবলম্বীকে ভালো চোখে দেখে না। তাই আপনাকে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী থেকে শত হাত দূরে থাকতে হবে। তার মানে কী দাঁড়াচ্ছে ? ধর্ম পালন হচ্ছে বাকি সবার চেয়ে আলাদা হওয়ার চেষ্টা”।

নাস্তিকতা মানুষকে অর্জন করতে হয়। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া নিজের পরম্পরা, বিশ্বাস, পরিবারের সংস্কার, প্রচলিত ধ্যান-ধারণাকে অস্বীকার করার মতো যুক্তি একজন মানুষকে প্রকৃতই শিক্ষিত করে তোলে। প্রকৃতই যাঁরা বিজ্ঞানের চর্চা করেন, নিজের পর্যবেক্ষণকে যাঁরা ব্যাখ্যা করতে পারেন তারা কোনোকিছুকে অন্ধভাবে মেনে নিতে পারেন না। নাস্তিকরা আস্তিকদের মতো নিজের যুক্তিকে অন্যের উপর কখনোই চাপান না। নাস্তিকরা তর্ক করেন, যুক্তি দেন, বিশ্লেষণ করেন- আর আস্ত ,করা জ্ঞান-যুক্তির অভাবে অন্ধভাবে নিজের বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে থাকেন। নাস্তিকরা তর্ক করেন, যুক্তির কথা বলেন, বিশ্লেষণ করেন ; অপরদিকে আস্তিকরা নিজের মত ও বিশ্বাসের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় আস্তিকরা রক্তপাতেও দ্বিধা বোধ করেন না। ধার্মিকদের মতের সমর্থন দেওয়ার জন্য পৃথিবীতে মানুষের অভাব পড়ে না। ভবিষ্যতেও অভাব পড়বে না। ধার্মিকদের রাষ্ট্র সহ প্রচুর পৃষ্ঠপোষক থাকে। কোটি কোটি টাকার ডোনেশন আসে ধার্মিকদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু নাস্তিকদের সেই সমর্থনটা কোথা থেকেও পাওয়া যায় না। অবশ্য সমর্থনের দরকার পড়ে না। কেউ সমর্থন করবে না-জেনেই মানুষ নাস্তিক হয়। পরিবারের সমর্থন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই থাকে না, থাকে না বন্ধু-বান্ধবদের সমর্থনও। নাস্তিকদের লড়াইটা একাই করতে হয়। সর্বশক্তিমান আস্তিক বা ধার্মিকদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে লড়াই করাটা যে কী কঠিন তা একমাত্র নাস্তিকরাই বোঝেন, হাড়ে হাড়ে !
আশার কথা, নাস্তিকরা ক্রমশই বাড়ছে। জগতের সব মানুষ যখন অন্ধবিশ্বাসে এবং কুসংস্কার বিশ্বাসে মগ্ন ঠিক সেই সময়টিতে প্রচুর মানুষ প্রতিদিন নাস্তিক হচ্ছেন। পৃথিবীর বেশিরভাগ বিখ্যাত বিখ্যাত জ্ঞানী মানুষগুলোই যে নাস্তিক। তা সত্ত্বে আস্তিকগণ নাস্তিকগণদের হত্যা করে নাস্তিকশূন্য করতে চায়। সেটা সম্ভব হবে না। নাস্তিকগণ মনে করেন, চারপাশে যে লোকগুলো আস্তিক তাদের জন্য করুণা হওয়া উচিত। এরা প্রকৃতপক্ষে অন্ধ এবং বাস্তবতাবর্জিত মানুষ। কুসংস্কারাচ্ছন্ন এইসব অন্ধ এবং মিথ্যেকে বিশ্বাসকারীদের জন্য একজন নাস্তিকের করুণা ছাড়া আর কিছু দেখানোর নেই। তারা তো বাস্তব জ্ঞান থেকে বঞ্চিত এবং সত্যের আলো থেকে বঞ্চিত মানুষ। এরা বাঁচে মিথ্যের মধ্যে, এরা মারা যায় মিথ্যেকে বিশ্বাস করেই। নাস্তিকগণ কুসংস্কারকে এবং মানুষের অন্ধবিশ্বাসকে তুচ্ছ জ্ঞান করে মানবতার জন্য লড়াই করছেন। নাস্তিকগণ মানবতার সেবক। অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের হাত থেকে মানবতাকে বাঁচাতেই নাস্তিকদের আন্দোলন। মানুষের ইতিহাসে নাস্তিকদের নাম একদিন সম্মানের সঙ্গেই উচ্চারিত হবে। কারণ নাস্তিকরাই সমাজ থেকে অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার এবং মিথ্যে বিশ্বাসকে সমাজ থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দেবে।

আসলে নাস্তিক বলে আলাদা করে ব্যাখ্যা দেওয়ার মতো কিছু আছে বলে মনে হয় না। তবে নাস্তিক, নির্ধার্মিক, অজ্ঞেয়বাদী, সংশয়বাদী – এদের মধ্যে কোনো প্রথাগত বিভেদ নেই, যা আছে তা হল সব বুদ্ধিগত এবং অহিংসতা। এরা সকলেই একই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে আমি নাস্তিক্যবাদী, নাকি আস্তিক্যবাদী ? আমি একই সঙ্গে নাস্তিক, সংশয়বাদী, অজ্ঞেয়বাদী, নির্ধার্মিক। আমাকে উপরে উল্লিখিত চারটি বিশেষণের যে-কোনো একটিতে দাগালেই চলবে, আমার আপত্তি নেই। (সমাপ্ত)

Next Post

ওরা কারা? ওরা আসলে কাকে মারতে চায়? কোন সময়ে মারতে চায়? । দিব্যেন্দু দ্বীপ

ওরা কারা? ওরা আসলে কাকে মারতে চায়? কোন সময়ে মারতে চায়? ওদের আপনি চিনতে পারবেন না। অন্তরে সমুদ্র সমান গরল নিয়ে মুখে মধু ছিটিয়ে ওরা আপনার সাথে কথা বলবে। হয়ত আপনার পাশেই রয়েছে আপনার ভবিষ্যত খুনি। দেখুন, অনুভূতিতে আঘাত লাগলে ওরা মারতে চায় এটা একেবারেই ভুল ধারণা। অনুভূতি থাকলে না […]