*বৈঠকের কথা স্বীকার করলেন আসলাম *বিব্রত বিএনপির হাইকমান্ড *আসলামের ওপর ক্ষুব্ধ চট্টগ্রামের সিনিয়র নেতারা
সরকার উত্খাতের চক্রান্তে অনেকদূর এগিয়েছিলেন কিন্তু হঠাত্ করেই সব ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দিল ইত্তেফাক। বৈঠকগুলো হয়েছিল দেশের বাইরে বসেই। ফলে অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’র সহযোগিতা নিয়ে সরকারকে ফেলে দেয়ার সব পরিকল্পনাই চূড়ান্ত করেছিলেন। ইত্তেফাকের অনুসন্ধানে বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের হাতে থাকা ছবি, ভিডিওসহ তথ্য প্রমাণ এখন আর অস্বীকার করতে পারছেন না কেউই। এখন বিএনপি নেতারাই বলছেন, মোসাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সরকার উত্খাতের চক্রান্তের কারণেই সহ-সম্পাদক থেকে এক লাফে ত্যাগী নেতাদের পেছনে ফেলে দলের যুগ্ম মহাসচিব হয়েছেন আসলাম। এখন এই নেতাকে নিয়েই চরম বিব্রত বিএনপির হাইকমান্ড।
বিএনপির অভ্যন্তরীণ সূত্রের খবর, খালেদা জিয়া সম্প্রতি আসলাম চৌধুরীকে ডেকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তাকে সাবধানে থাকার পরামর্শও দিয়েছেন খালেদা জিয়া। এদিকে গতকাল ইত্তেফাকের হাতে আসা এক ভিডিও চিত্রে দেখা যাচ্ছে আসলাম চৌধুরী একজনের সঙ্গে কথা বলছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘দিল্লি থেকে আগ্রা যাওয়ার পথে গাড়িতে শিপন কুমার বসুর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে দিল্লি ফেরার পর মোসাদ নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন শিপন। আমি তার কথায় রাজি হই। একটা বৈঠকে তার সঙ্গে দেখাও করি। আমি আসলে আগে মোসাদ সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। সেখানে আমি দেশ ও আমাদের দল সম্পর্কে কথা বলি। রাষ্ট্র বিরোধী কোন তত্পরতা সেখানে ছিল না।’ ভিডিওর মধ্যে স্ববিরোধী কথা বলেছেন আসলাম। একবার বলেছেন, মোসাদ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না। আবার বলেছেন, মেন্দি সাফাদির নাম আগেই শুনেছেন। এবারই প্রথম তার সঙ্গে দেখা হয়েছে।
চট্টগ্রামের একজন সিনিয়র বিএনপি নেতা ইত্তেফাককে বলেন, আসলাম চৌধুরী বিএনপির খুব উচ্চ পর্যায়ের নেতা নন কিন্তু এবারের সম্মেলনের পর হঠাত্ করেই লাইমলাইটে চলে আসেন তিনি। হয়ে যান যুগ্ম মহাসচিব। অথচ চট্টগ্রামের অনেক সিনিয়র নেতা এখনো কোন পদ পাননি। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যেই কানা-ঘুসা চলছিল। এখন বিষয়টি সামনে চলে আসায় দলে পদোন্নতির কারণ বুঝতে পারছেন সবাই। তারা মনে করেন, আসলামের এই তত্পরতা দলের বড় ক্ষতি করে দিয়েছে। মুসলিম দেশগুলো এখন বিএনপির উপর ক্ষুব্দ হয়ে উঠবে। এতদিন বিএনপির বন্ধু ছিল ওই মুসলিম দেশগুলো। এখন ইসরাইলের সঙ্গে সখ্যতা সেই সম্পর্কে ফাটল ধরাবে।
এর আগে সাফাদি তার ফেসবুক পেজে এক স্টাটাস দিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনকারীদের বিচারের আওতায় আনতে এবং বঞ্চিত হাজার হাজার নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বিলীন হওয়া ঠেকাতেও কাজ করছি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এই দেশটি কেবল সংখ্যালঘুদের জন্য হুমকি নয়, দেশটি সন্ত্রাসীদেরও স্বর্গ।’
ইসরাইলের সংবাদ মাধ্যম ‘জেরুজালেম অনলাইন ডট কম’ এর প্রতিবেদনেই বাংলাদেশ সরকারকে উত্খাত করার ষড়যন্ত্রের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে মেন্দি এন সাফাদি বলেছেন, ‘শিগগিরই সবক্ষেত্রে বাংলাদেশের দরজা ইসরাইলিদের জন্য খুলে দেয়া হবে। আর এটা অসম্ভব কোনো আকাঙ্খা নয়। নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার জন্য কাজ করা একটি নৈতিক দায়িত্ব। বাংলাদেশের নাগরিকদের পাসপোর্টেও লেখা থাকে ইসরাইল ছাড়া সব দেশ ভ্রমণ করা যাবে। সেটাও আমি শিগগিরই পরিবর্তন করতে যাচ্ছি।’
# খবরটি ইত্তেফাক থেকে নেওয়া হয়েছে। লিংক নিচে দেওয়া হল:
http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/first-page/2016/05/13/119428.html