খসড়া আইনের বিষয়ে মতামত নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত মতামত চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে শিক্ষা আইনের খসড়া প্রকাশ করে মতামত আহ্বান করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিছু বিষয় নিয়ে সমালোচনা, নানা প্রস্তাব বিবেচনা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবার নতুন করে খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
যেসব ক্ষেত্রে শিক্ষক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দণ্ড ও জরিমানা গুনতে হবে
১. ইংরেজী মাধ্যমসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেতন ও অন্যান্য ফি সরকারের অনুমোদন ছাড়া নির্ধারণ করা যাবে না। আইন লঙ্ঘন করলে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা এক বছরের কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে আইনে। ইংরেজী মাধ্যমের প্রতিষ্ঠান হলেও বাংলা ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিষয় পড়ানো হবে বাধ্যতামূলক।
২. আইন অনুযায়ী প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকে কিন্ডারগার্টেন, ইংরেজী মাধ্যম ও এবতেদায়ী মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের কাছে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের এ বিধান লঙ্ঘন করলে প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান জরিমানা বা ছয় মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
৩. মাধ্যমিক স্তরে সাধারণ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও ইংরেজী মাধ্যম বা বিদেশী কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশী কোন শাখাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন নিতে হবে। এ নিয়ম লঙ্ঘন করলেও প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
৪. জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচী প্রণয়ন করবে। এনসিটিবির অনুমোদন ছাড়া এসব স্তরে শিক্ষাক্রমে অতিরিক্ত কোন বিষয় বা বই অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। কেউ অতিরিক্ত বই অন্তর্ভুক্ত করলে জরিমানা ও ছয় মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
৫. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালী সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতির পরিপন্থী ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কার্যক্রম অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এজন্যও জরিমানা ও ছয় মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
৬. সরকার প্রাইভেট টিউশন ও কোচিং বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এই ধারা লঙ্ঘন করলে তিনি অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা ছয় মাসের জেল বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
৭. শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তির বিষয়ে বলা আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালীন মানসিক বা শারীরিক শাস্তি দেয়া যাবে না। এটি লঙ্ঘন করলে শিক্ষক অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা তিন মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
৮. প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে নির্ধারিত পাঠ্যবই না পড়িয়ে বাইরের বই পড়ালে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের জেল বা উভয় দণ্ড রাখা হয়েছে খসড়ায়।
৯. কলেজ পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনার জন্য অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা পাঁচ বছর জেল বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
১০. অনুমতি ছাড়া বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় চালালে বা শাখা ক্যাম্পাস, স্ট্যাডি সেন্টার বা টিউটোরিয়াল কেন্দ্র স্থাপন করলে পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড ভোগ করতে হবে।