“মানুষের ভালোবাসা নিয়েই আমি টিকে আছি” // অ্যাড. পঙ্কজ কান্তি অধিকারী

মঘিয়া

অ্যাডভোকেট পঙ্কজ কান্তি অধিকারী

পিতা: সুধীর কুমার অধিকারী

মাতা: নমিতা রাণী অধিকারী (কণক)

জন্মস্থান: ছোট আন্ধারমানিক

শিক্ষাগত যোগ্যতা: এমএ, এলএলবি

পেশা: আইনজীবী

চেয়ারম্যানঃ মঘিয়া ইউনিয়ন, বাগেরহাট 

মঘিয়া
অ্যাড. পঙ্কজ কান্তি অধিকারী।

প্রশ্ন: আইনজীবী পেশায় থেকেও একজন জনপ্রতিনিধি হওয়ার ইচ্ছা আপনার কেন হলো?

এলাকার উন্নয়ন এবং মানুষের সেবা করার তাগিদ থেকেই আমি জনপ্রতিনিধি হয়েছি। পেশাগত কারণে এলাকার মানুষ আমার কাছে যায়। তাদেরকে আমি সাধ্যমতো সহযোগিতা করি, কিন্তু এলাকার মানুষের কাছ থেকে, বিশেষ করে যারা আর্থিকভাবে দরিদ্র তাদের কাছ থেকে কখনও আমি টাকা নিই না। ফলে এলাকার মানুষের আমার ওপর এক ধরনের আস্থা তৈরি হয়েছে। জনপ্রতিনিধি না হয়ে শুধু আইনজীবী পেশায় থাকলে আমি হয়ত অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভবান হতাম, কিন্তু এলাকার মানুষের জন্য কাজ করার মানসিক তৃপ্তিটা পেতাম না।

প্রশ্ন: একজন চেয়ারম্যান হিসেবে চ্যালেঞ্জগুলো কী কী?

সুযোগ সুবিধাগুলো সঠিকভাবে বণ্টন করাটাই মূল চ্যালেঞ্জ। যেমন, ত্রাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমি একটা নীতি মেনে চলি— ত্রাণ নিয়মানুযায়ী মেম্বারদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়ার পর অবশিষ্ট ত্রাণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে আমি বঞ্চিতদের মধ্যে ভাগ করে দিই। ফলে সাধারণত আমার ইউনিয়নে কেউ অখুশি থাকে না। তবে সংকট তো কিছু আছেই— আমাদের দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক বাস্তবতায় একটা ইউনিয়নের জন্য যে বরাদ্দ থাকে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। তবে এ সমস্যাটা তো সবার।

প্রশ্ন: চেয়ারম্যান হিসেবে আপনার বিশেষ কোনো সফলতা বা উদ্যোগ আছে কিনা?

চেয়ারম্যান হিসেবে সকল দায়িত্বই আমি গুরুত্বের সাথে পালন করি। জনগণের চাহিদা মোতাবেক এমপি মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করে তাদের দাবী দাওয়া পূরণ করার চেষ্টা করি।

প্রশ্ন: চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করতে আপনাদের অফিশে বসার কোনো ধরাবাধা নিয়ম আছে কিনা?

যদিও কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই, তবে আমি প্রতিদিন অফিশে আসি। জনগণ আমাকে পায়।

প্রশ্ন: জন্ম/মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ কায়েক সনদ —এগুলো প্রদানে হয়রানির অভিযোগ কতটা সত্য?

ভোগান্তি অনেক ক্ষেত্রে হয়। তবে আমার ইউনিয়নে তুলনামূলকভাবে ত্রুটি কম। এবং যেটুকু যা ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে তা আমার পূর্বসূরীদের অবহেলার কারণে। ২০০৭ সালে জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হয়। ঐ সময় যেগুলো নিবন্ধিত হয়েছে তার আশি শতাংশই ভুল। সেগুলো এখন ঠিক করতে হচ্ছে। ভোগান্তি হচ্ছে।

প্রশ্ন: এলাকায় সালিশী মীমাংসা বেড়েছে, নাকি কমেছে?

গ্রামে দাঙ্গা হাঙ্গামা কমেছে, ফলে সালিশী মীমাংসাও কমেছে। ওয়ার্ড মেম্বার এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে অনেক সময় সেগুলো মীমাংসীত হয়ে যায়।

প্রশ্ন: চেয়ারম্যান হিসেবে আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য কোনো অভাববোধ করেন কিনা?

ইউনিয়ন পরিষদে জনবল বাড়ানো দরকার। একজন সচিবের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সকল কাজ নির্বাহ করা কঠিন হয়ে যায়। কিছু অবকাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন— যেমন, একটি সেমিনার কক্ষ দরকার, বাথরুমগুলোর আধুনিকায়ন প্রয়োজন, একইসাথে পূর্ণকালীন একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাকা প্রয়োজন।

প্রশ্ন: একজন চেয়ারম্যানের বর্তমান মেয়াদ পাঁচ বছর। আপনি পূর্বেও চেয়ারম্যান ছিলেন। জনগণ আপনাকে কীভাবে দেখে?

যদিও আমি আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক এবং কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে রয়েছি, কিন্তু আমি যখন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করি তখন দলমত নির্বিশেষে কাজ করি। এদিক থেকে জনগণ সন্তুষ্ট রয়েছে।