চারুকলার তেহারিতে গরুর মাংস দিয়ে খাওয়ানো হয় মঙ্গল শোভাযাত্রার শিল্পী-কর্মীদের

follow-upnews
0 0

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের ক্যান্টিন থেকে গরুর মাংস দিয়ে তৈরি তেহারি খাওয়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্যান্টিনে ভাঙচুর করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে এতে কোনো ষড়যন্ত্র ছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখার কথা বলেছেন।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষ হওয়ার পর এ আয়োজনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের মাঝে তেহারি পরিবেশন করা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন যে, খাবারে গরুর মাংস ছিল। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ক্যান্টিনে ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে বাংলা নববর্ষ- ১৪২৪ উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী, চারুকলা অনুষদের ডিন ও শিক্ষকরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ক্যান্টিন ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি জানতাম না যে ক্যান্টিনে গরুর মাংস পরিবেশন করা যাবে না। তাই না বুঝে এ কাজ করেছি।’ বৈশাখ উদযাপনে শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক সাগর হোসেন সোহাগ বলেন, ‘চারুকলা অনুষদে গরুর মাংস রান্না সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। কিন্তু ক্যান্টিন ম্যানেজার নাকি বিষয়টি জানেনই না। এটা কেমন কথা। না জেনে তিনি ক্যান্টিন পরিচালনা করছেন? তিনি পরিকল্পিতভাবেই এ কাজ করেছেন। আমাদের দাবি তাকে ক্যান্টিন থেকে বিতাড়িত করতে হবে এবং তদন্ত স্বাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এম আমজাদ আলী বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে এটি অনেক গভীর ষড়যন্ত্র। ওই ক্যান্টিন ম্যানেজার (জাকির) বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি নজরুল মাজারের নিরাপত্তাকর্মী। নিরাপত্তা কর্মে দায়িত্ব পালনকালেও প্রক্টরিয়াল টিমের সঙ্গে তার একাধিকবার বিভিন্ন বিষয়ে ঝামেলা হয়েছে। তাকে অনেক আগে থেকে নজরে রাখা হয়েছে। এখন সন্দেহ আরো বেড়েছে। বাকিটা তদন্ত স্বাপেক্ষে বলা যাবে।’

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নিসার হোসেন বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। চারুকলার ক্যান্টিনের কখনো গরুর মাংস পরিবেশন করা হয় না। কিন্তু তারা এটি কেন করলো, সেটি তদন্ত করে দেখতে হবে। এর মধ্যে মনে হচ্ছে একটা দুরভিসন্ধি আছে। সে কোনোদিন তেহারি করে না। আজ কেন করলো সেটিও খতিয়ে দেখার বিষয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অনেক আগেই শুনেছি যে, পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ভণ্ডুল করার একটা ষড়যন্ত্র চলছে। মনে হচ্ছে এ ঘটনাটি তারই একটি অংশ। তবে এটি সরাসরি বলা যাচ্ছে না। কিন্তু আমরা সন্দেহ করছি। তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপতত পরিস্থিতি শান্ত আছে। এটা ভালো হয়েছে যে, কোনোরকম বিশৃঙ্খলা ছাড়াই আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’

বাংলা নববর্ষ- ১৪২৪ উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে মনে  হচ্ছে, এটাতে একটি দুষ্টচক্রের ষড়যন্ত্র আছে। এটি খতিয়ে দেখা উচিত। এটাকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। খুব কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে ডিনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তদন্ত স্বাপেক্ষে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হয়। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন  কাজ করার সাহস না পায়।’

সূত্র : রাইজিংকবিডি

Next Post

জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা-২০১৭ -এর বিজ্ঞপ্তি

এগুলো পড়তে পারেন