খালেদাকে ‘গোয়ার্তুমি’ ছাড়তে বললেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%ab%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b9
ডা: জাফরুল্লাহ ছবিতে সর্বডানে

বিএনপি সমর্থিত এই পেশাজীবী নেতা বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় বলেন, “আমি বলব, বড় দলের গোয়ার্তুমি ছেড়ে ছোট-বড় সকলকে নিয়ে, বিশেষ করে আমাদের অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেবকে বিশেষ পদ দিয়ে সম্মিলিত বিরোধী দল গঠন করুন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের যেমন ২১ দফা ছিল, আপনারাও ৫-৬ দফার ভিত্তিতে রাস্তায় নামুন।”

সবার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও আবাসন কীভাবে নিশ্চিত হবে সে রূপরেখা দিয়ে আন্দোলনে নামার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “তারপর আসেন, গণতন্ত্রের অধিকার নিজের ভোট নিজে কীভাবে দেবে- জনগণের সনদ নিয়ে রাস্তায় নামুন। দেখবেন অগণতান্ত্রিকতা থাকবে না, কেউ গায়ের জোরে আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে নাগরিকদের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

বিএনপির থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়াকে প্রতি সপ্তাহে সভা করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আপনার কমিটিতে ছয়শ নেতাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। সবাইকে চেনেন কি না তাও আমি জানি না। প্রতি সপ্তাহে একবার অন্তত তাদের বাড়িতে ডেকে এনে চা খাওয়ান, চেহারা দেখেন। তাদের নিয়ে প্রতি সপ্তাহে রাস্তায় দাঁড়ান।”

সরকারবিরোধী কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে বিএনপি নেত্রীকে জনগণের কাছে আসার আহ্বান জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, “আপনাদের সাথে কমপক্ষে ছয় থেকে সাত কোটি লোক আছে। বিএনপির সাথে একলাই পাঁচ কোটি মানুষ আছে। ঘরে বইসা থাকলে আপনাকে (খালেদা জিয়া) চেয়ারে বসাবে না।

“আপনার ছেলেকে ওই বিলাতের শহরে থাকতে হবে। তার বউয়ের পয়সায় সংসার চালাইতে হবে।”

বিভিন্ন মামলায় পরোয়ানা মাথায় নিয়ে গত আট বছর ধরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে লন্ডনে আছেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে দেশে ফিরিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে আনার আলোচনা রয়েছে। তবে পেশায় চিকিৎসক জোবাইদাকে এরমধ্যে না টানার পক্ষে মত ডা. জাফরুল্লাহর।

“জোবাইদাকে এখানে আইনা বেকার বানাইয়েন না। আপনাদের দায়িত্ব আপনারা পালন করেন,” বলেন তিনি।

জনগণের ক্ষমতায়ন কীভাবে হবে তার রূপরেখাও খালেদা জিয়াকে দিতে বলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

বিএনপি নেত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “শুধু ঢাকায় জাতীয় সংসদ হলেই জনগণের হাতে ক্ষমতা আসে না। আজকে সেখানে বাংলাদেশকে ৮-১০ প্রদেশ অথবা ৫০-৬৪টা স্টেট করে দেন, সংখ্যাটা যে কোনো জায়গায় আসতে পারে। জনগণকে তার বক্তব্য রাখার অধিকার দিতে হবে।”

নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে খালেদা জিয়ার প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, “উনি যে প্রস্তাব করেছেন, সেগুলো অবশ্যই আলোচনা হওয়া উচিৎ। আমি যা বুঝি, সরকারি মহলে দুইটা জিনিসের আপত্তি, ইঁদুরের গন্ধ পাচ্ছেন- একটা হলো জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগকে নাকি কায়দা করে বিএনপি মাঠে রাখতে চাইছে। আরেকটা সামরিক বাহিনীর বিচারিক ক্ষমতা প্রদান।

“সরকারকে বলব, এটা যখন বুঝতেই পারেন তাহলে আইন করে জামায়াতরে ব্যান করে দিন।”

জাতীয় নির্বাচনের সময়ে সামরিক বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে মাঠে রাখার খালেদার প্রস্তাবে সমর্থন জানান জাফরুল্লাহ।

দেশে নজিরবিহীন দুর্নীতি হওয়ার অভিযোগ তুলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “কুইক রেন্টাল সাধারণত ছয় মাস কি এক বছরের হয়। আমাদের এখানে কুইক রেন্টালে কুইক দুর্নীতি, কুইক প্রোফিট, কুইক লুটপাট।

“আমাদের অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত অনেক সুন্দর সুন্দর তথ্য দেন, ভালো কথা বলেন, জ্ঞানী মানুষ। উনিই প্রথম দেখিয়েছিলেন যে, জামায়াতের অনেক সহায়-সম্পত্তি আছে। জামায়াতের যত সহায়-সম্পত্তি আছে, তার চেয়ে অনেক বেশি সম্পত্তি আছে সামিট গ্রুপের। কারণ তারা কুইক রেন্টালের মাধ্যমে অর্জন করেছেন। ওরিয়ন গ্রুপও করেছেন। আজকে দুর্নীতি দমন কমিশনকে প্রতিটি বিষয় দেখা উচিত।”

সূত্র : বিডিনিউজ