প্রথম আলোর একটি রিপোর্ট নিয়ে সরব একটি আলোচনা এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ফেসবুকে। তারা রিপোর্ট করেছে, “১০০ টাকার বাতিতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি”। জনগণ প্রশ্ন তুলেছে, “ঠিক কী কারনে ৩০০ টাকার বাতিতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় না, কিন্তু ১০০ টাকার বাতিতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়?” প্রথম আলো রিপোর্টে অবশ্য বৈজ্ঞানিকভাবে সে ব্যাখ্যা নেই, আছে শুধু দামের বিষয়টি। পাশাপাশি বুয়েটের একজন শিক্ষকের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেননি যে একশো টাকার বাল্বে ক্ষতি হয় আর তিনশো টাকার বাল্বে ক্ষতি হয় না। তিনি বলেছেন, সিএফএল লাইটে ক্ষতি হয়। প্রথম আলো রিপোর্টটি তাদের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছে, ফলে লক্ষ্ লক্ষ লোক তা দেখছে। উল্লেখ্য, প্রথম আলোর মালিক পক্ষ ট্রান্সকম গ্রুপ ‘ট্রান্সটেক’ নামে একই পাওয়ারের যে বাতি বিক্রী করে তার দাম দুইশো আশি থেকে তিনশো টাকা।
![1](https://follow-upnews.com/wp-content/uploads/2016/08/1-47-300x300.jpg)
এনার্জি সেভিং লাইট আসলে কী: এনার্জি সেভিং বাল্ব (Energy Saving Lamp) মুলত এক ধরনের সি এফ এল (CFL) লাইট। এটি সাধারণ বাল্ব এবং টিউব লাইটের বিকল্প হলেও টিউব লাইটের চেয়ে অনেক বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এটা সাধারণত ৬০% থেকে ৭০% বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে থাকে যা আমাদের মত বিদ্যুৎ সংকটের দেশের জন্য খুবই উপযোগী।
স্বাস্থ্যগত সমস্যা: সাধারণ বাল্বের আলোতে অল্প মাত্রায় অতি বেগুনী রশ্মি (UV Ray) উপস্থিত থাকে। তবে CFL বাল্বে ক্ষতিকর রশ্মির মাত্রা অনেক বেশি। তাছাড়া সি এফ এল (এনার্জি সেভিং) বাল্ব ভেঙ্গে গেলে বা ভাঙ্গা হলে (নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর) সেখান থেকে ক্ষতিকর পারদ বাষ্প নির্গত হয়, যার মাত্রা ৪০০ ন্যানো গ্রামের চেয়ে অনেক বেশি। পারদ বাষ্প পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ক্ষতির বিষয়গুলো মাথায় রেখে অনেক দেশ, বিশেষত, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে এই বাল্বের ব্যবহার বর্জন করেছে।
বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা সি এফ এল লাইটের (Energy Saving Bulb) বিকল্প হিসেবে এল ই ডি (LED) বাল্বের ব্যবহারকে উৎসাহিত করছেন । তবে এল ই ডি বাল্বের (LED Bulb) দাম অনেক বেশি হয়। এল ই ডি বাল্ব সি এফ এল (CFL-এনার্জি সেভিং) বাল্বের মতই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং তা সিএফএল বাল্বের চেয়েও বেশি দীর্ঘস্থায়ী।
![2](https://follow-upnews.com/wp-content/uploads/2016/08/2-1-300x191.jpg)
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দামের সাথে সিএফএল বাল্বের ক্ষতির তারতাম্য কতটা হতে পারে? উত্তরটা দেওয়া জন্য একটা চমৎকার তুলনা করা যেতে পারে- ধরুণ, বাজার থেকে কেউ একশো টাকা কেজি দরে এক কেজি মাছ কিনে আনল, আর একজন চারশো টাকা কেজি দরে এক কেজি মাছ কিনল। এখন দামের হিসেবে এটি কি বলা যায় যে চারশো টাকা কেজি দরে যে মাছ কিনেছে সে বেশি প্রোটিন পাবে? বা বিষয়টি কি এরকম যে ডালভাত খেয়ে পরীক্ষা দিলে সে কম মার্কস পাবে আর মাংস ভাত খেয়ে পরীক্ষা দিলে সে বেশি মার্কস পাবে? নিশ্চয় সেরকমটি হওয়ার কথা নয়। এক্ষেত্রেও তদ্রুপ, বিষয় হচ্ছে, সিএফএল বাল্ব ক্ষতিকর।