ঈদের তিন দিনে ৪০ রোগীর মৃত্যু শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে

follow-upnews
0 0

ঈদের ছুটির তিন দিনে বরিশাল শের-ই- বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৪ শিশুসহ ৪০ জন রোগী মারা গেছেন। এর মধ্যে ঈদের দিন মারা যায় ২৪ জন। আর এ সময়ে স্বেচ্ছায় হাসপাতাল ছেড়েছেন ১৬৩ জন রোগী। হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এস এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘যারা মারা গেছেন তাদের অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো। তবে ঈদের দিন ২৪ জন রোগী মারা যাওয়ার ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’

রোগী ও রোগীর স্বজনদের অভিযোগ— ছুটি ছাড়াও অলিখিতভাবে ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা ছুটি কাটানোর ফলে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত হয়েছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিচালক বলেন, ‘চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংকট রয়েছে। তবে ঈদের বন্ধে হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স কর্মরত ছিলেন।’ এ ছাড়া  এ্যাজমা, হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত বেশ কয়েকজন মুমূর্ষ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে হাসপাতাল পরিচালক দাবি করেন।

‘হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে ঈদেও আগের দিন, ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন গুরুতর অবস্থায় ঢাকাসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চলে গেছেন ৬১ জন। ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৩২ জন রোগী। এছাড়া এ সময় নতুন ভর্তি হয়েছেন নারী ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ৮১১ জন রোগী।

হাসপাতালের রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগের দিন শুক্রবার মারা গেছেন আট জন রোগী। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চলে গেছেন ৩২ জন। প্রয়োজনীয় সেবা না পেয়ে স্বেচ্ছায় হাসপাতাল ছেড়েছেন ৬৯ জন। সুস্থ্য হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩৯ জন। ওইদিন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ২৬১ জন। মোট রোগী ছিলো এক হাজার ৩০ জন।

ঈদের দিন শনিবার ৯ শিশুসহ ২৪ জন রোগী মারা গেছে। অন্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চলে গেছেন ১৩ রোগী। স্বেচ্ছায় হাসপাতাল ছেড়েছেন ৬৩ জন। ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি গেছেন ১৩৯ জন রোগী। ওইদিন নতুন ভর্তি হয়েছে ২০৭ জন।

ঈদের পরের দিন রবিবার মারা গেছেন আটজন। উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র চলে গেছেন ১৬ জন। সন্তোষজনক চিকিৎসা না পেয়ে স্বেচ্ছায় বাড়ি ফিরেছেন ৩১ জন। ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৫৪ জন।

ঈদের পরের দিন রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৪৩ জন। ওইদিন মোট রোগী ভর্তি ছিলো এক হাজার ১৮৯ জন।

হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট দফতরের তথ্য অনুযায়ী ৩৫ জন অমুসলিমসহ হাসপাতালের রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার, ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ও ইনডোর মেডিকেল অফিসার মোট ১৩০ জন। মুসলিমদের মধ্যে ঈদের ছুটি নিয়েছেন মাত্র ১০জন। ফলে ছুটি ছাড়া অলিখিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী বেশীরভাগ চিকিৎসক। এমনকি জরুরি বিভাগে ১০ জন চিকিৎসকের স্থলে তিন দিনে দায়িত্ব পালন করেছেন মাত্র তিন জন চিকিৎসক।

অমুসলিম ২৫ জনসহ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক ছিলেন ১৭০ জন। এদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন বরিশালে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। ঈদের তিন দিনে অর্ধেকের বেশী ইন্টার্ন চিকিৎসক অনুপস্থিত ছিলেন ।

নার্সদের ক্ষেত্রেও ঘটেছে একই ঘটনা। মোট ৭৩৫ জন নার্সের মধ্যে ২৪৫ জন হিন্দু, ২৯ জন খ্রিস্টান এবং ৪৫১ জন মুসলিম।  এদের মধ্যে অমুসলিম নার্সরাই ছিলেন ঈদের আগে ও পরের তিন দিন হাসপাতালের ভরসা।

সবচেয়ে বেশি সংকট ছিলো আয়া, ঝাড়ুদারসহ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর। এমনিতেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর চরম সংকট। এরমধ্যে অসুস্থতাসহ নানা কারণে কাজে আসেননি কর্মচারীদের একটি অংশ।

Next Post

শুধু মানের বিচারে ক্যাডার পছন্দ করবেন নাকি আপনার চরিত্র বিচারেও?

হাজার বছর আগে চীনা দার্শনিক কনফুসিয়াস একটা কথা বলেছিলেন, “এমন একটি কাজ খুজে নাও যেটা তোমার ভাল লাগে। দেখ, বাকি জীবনে আর তোমাকে কাজ করতে হবে না।” কথাটার মর্মার্থ এই, কাজ হতে হবে ব্যক্তির ভাললাগার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর তা তখনই সম্ভব যখন সে কাজের ধরণটি আপনার ব্যক্তিত্ব, আপনার চিন্তা-ভাবনা, ভাললাগা, […]
প্লাবন ইমদাদ

এগুলো পড়তে পারেন