ফিরে দেখা: হেফাজতকর্মীর হামলায় মারা গেলেন বুয়েটের আহত ছাত্র আরিফ রায়হান দ্বীপ

follow-upnews
0 0

সন্দেহভাজন হেফাজতকর্মীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিত্সাধীন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আরিফ রায়হান ওরফে দীপ আজ মঙ্গলবার ভোররাতে মারা গেছেন। ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান।

এরপর তার লাশ বুয়েটে নেওয়া হয়।সেখানে তার জানাজার পর লাশ পিরোজপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।জানাজায় বুয়েটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, আরিফের বাবা, ভাইসহ আত্মীয়স্বজন অংশ নেন।

গত ৯ এপ্রিল (২০১৩) বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে আরিফের মাথায় ও পিঠে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আরিফ যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা গত ১৭ এপ্রিল বুয়েটের মেজবাহউদ্দীন নামের এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে।

মেজবাহ বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি এম রশীদ হলের ৩০১ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা। মেজবাহ হেফাজতের সমর্থক বলে ডিবি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।

এ ঘটনায় চকবাজার থানায় আরিফের ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এ মামলায় মেজবাহকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ডিবি কর্মকর্তারা দাবি করেন, জিজ্ঞাসাবাদে মেজবাহ বলেছেন, গত ৬ এপ্রিল ঢাকায় হেফাজতের সমাবেশে আসা লোকজনকে খাবার সরবরাহ করায় একটি হলের মসজিদের ইমামকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছিলেন আরিফ ও তার বন্ধুরা। এ জন্যই তিনি আরিফের ওপর হামলা চালান।

বুয়েটের উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আরিফের মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত।একজন শিক্ষার্থীকে আরেকজন শিক্ষার্থী এভাবে আঘাত করে মেরে ফেলতে পারে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা আরিফের উন্নত চিকিত্সার জন্য তাকে ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং সে অনুসারে কাজও এগিয়েছিল।’

উপাচার্য আরও জানান, বুয়েটের নিজস্ব তদন্তেও আরিফকে কুপিয়ে আঘাত করার জন্য মেজবাহকে দায়ী করা হয়।তদন্তের পর মেজবাহকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।এ ছাড়া, ওই মসজিদের ইমামকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বুয়েটে দোয়া ও মিলাদ: আরিফের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ৫ জুলাই শুক্রবার বুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ আসর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

মেজবার ভগ্নিপতি আশরাফুজ্জামান আজ প্রথম আলো ডটকমকে জানান, তারা আপাতত মেজবার মামলাটি নিয়ে আইনি লড়াইয়ে যাবেন না। তাদের আশঙ্কা, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের আইনি লড়াইয়ে গেলে আরও সমস্যায় পড়তে হবে।মেজবাহ বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন।

আশরাফুজ্জামান বলেন, মেজবাহ এ ঘটনায় দুঃখিত। তবে তিনি (মেজবাহ) মনে করেন, আরিফকে কুপিয়ে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি তাঁর (আরিফুল) প্রাপ্য ছিল। 

খবর: ২ জুলাই ২০১৩, প্রথম আলো। শিরোনামটি সম্পাদনা করা হয়েছে।

৮ বছরেও দীপ হত্যার বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্রলীগের নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ রায়হান দীপ হত্যার দীর্ঘ আট বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিচার কাজ শেষ না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ।

একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে আরিফ রায়হান দীপ হত্যায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।

শুক্রবার বিকেলে শহীদ আরিফ রায়হান দীপের স্মৃতির স্মরণে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় এই দাবি জানান বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ইউকসু) সাবেক জিএস প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। এ সময় বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শহীদ আরিফ রায়হান দীপের স্বজনরা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।

প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীচক্র দীপকে হত্যা করেছে। হেফাজত, জামায়াত, বিএনপি, জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। আমরা বুয়েটের সকল হত্যার নিন্দা জানাই। দীপ হত্যার প্রধান আসামি মেজবাহ নিজেকে মানসিক বিকারগ্রস্ত দেখিয়ে জামিন নিয়েছে। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি সে বিয়ে করেছে। আমরা চাই মামলার প্রধান আসামির জামিন বাতিল করে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দীপের হত্যাকারীকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক।

সভায় বক্তারা বলেন, আরিফ রায়হান দীপ হত্যার আট বছর পার হয়ে গেলেও এখনও বিচার হয়নি। উল্টো প্রধান আসামি জামিনে বের হয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে, যা খুবই হতাশাজনক। আমরা দেখেছি অনেক মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে করা হচ্ছে। কিন্তু আরিফ রায়হান দীপের হত্যার দ্রুত বিচার কেন হচ্ছে না? এই বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ করার মাধ্যমে দীপ হত্যার ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে। এসময় বক্তারা দীপ হত্যার দ্রুত বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে আরিফ রায়হান দীপকে বর্বরভাবে মাথায় ও পিঠে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী। পরে একই বছরের ২ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান তিনি।

খবর: ২ জুলাই ২০২১, সমকাল।

Next Post

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য বাতায়নে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে রিটায়ার্ড ডাক্তারের নাম!

বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি তথ্য বাতায়নে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা হিসেবে যার নাম রয়েছে তিনি আর এ হাসপাতালে কর্মরত নয় বলে জানালেন। ডাঃ শিকদার আলী আকবর নামের ৮ম বিসিএস-এর এ কর্মকর্তা জানালেন সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ে চাকরি করে তিনি এখন অবসরে। কেন তার নামটি এখনও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা […]
কচুয়া