খবরটা হচ্ছে—
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। অনেকেই জীবিকার তাগিদে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন।এমন দুই বৃদ্ধ ভ্যানচালককে কানধরে উঠবস করিয়েছেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) সাইয়েমা হাসান। ছবি তুলেই তিনি ক্ষান্ত হননি সেই ছবি আবার টানিয়ে দিয়েছেন এসিল্যান্ডের সরকারি ওয়েবসাইটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বয়ে যাচ্ছে নিন্দার ঝড়।
সাইমা হাসান নামে এই এসিল্যান্ড নারীর ছবি (তোলা ছবি) শেয়ার করে ফেসবুকে নাগরিক সমাজ নানান মতামত দিচ্ছেন। নির্মাতা সাকুর মজিদ লিখেছেন,
সারা ফেইসবুক যখন লজ্জায় কাতর, এই সহকারি কমিশনার তার বেয়াদবির ছবি সরকারি দপ্তরের কভার পেইজ করে রেখেছে http://acl.manirampur.jessore.gov.bd/ । একে প্রথমেই শিষ্টাচার শেখানর স্কুলে ভর্তি করানো হোক। পরে আবার বি সি এস দেবে না হয়।
বেয়াদব।
ফেসবুকে রাসেল উকিল নামে আরেকজন লিখেছেন—
যাকে কান ধরে উঠবস করানো হচ্ছে সেই বৃদ্ধ একজন ভ্যানচালক। পেটের দায়ে সংসারের চাল-ডাল কিনতে এসেছিলেন যশোরের মণিরামপুরের চিনেটোলা বাজারে। এই অপরাধেই উপজেলার এসিল্যান্ড সাইমা হাসান জনসম্মুখে তাকে কান ধরে উঠবস করালেন। আবার মজার ঘটনা মনে করে তিনি নিজেই ছবি তুললেন নিজের মোবাইলে। এসিল্যান্ড দেশের সামান্য একজন কর্মচারি। তাদের বেতন হয় এসব ভ্যানচালক খেটে খাওয়া মানুষের টাকায় তা হয়তো এই এসিল্যান্ড ভুলে গেছেন। এই ছবি দেখে আমি ভ্যানচালক চাচার বয়স দেখে একজন মানুষ হিসেবে নিজেকে স্থির রাখতে পারছি না। আমি এই এসিল্যান্ডের শাস্তি দাবি করছি…
বিভিন্নভাবে নাগরিক সমাজ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে—
অনেকে ভাবছেন একজন ডিসি সুলতানা পারভীন এবং একজন সাইমা হাসান হয়ত আমলাতন্ত্রের বিচ্ছিন্ন ঘটনা, কিন্তু আসলে তা নয়। রাজনীতির মুখটা আমরা সবসময় চিনি, কিন্তু আমলাতন্ত্রের দেখি মুখোশটা। একজন সাইমা হাসান এবং একজন সুলতানা পারভীন আমাদের মুখোশ খুলে আপন রূপ দেখাচ্ছেন, সে শুধু তাদের নিজের মুখ নয়, দুএকটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে এটাই এ দেশের আমলাতন্ত্র, এরাই দেশটা চালায়। তাই বলা যায়— ছবির এই বৃদ্ধ হচ্ছেন বাংলাদেশ, আর ছবি তুলছে যে নারী ও হচ্ছে বাংলাদেশের পিঠে বোঝা হয়ে চেপে বসা অবৈধ চর্চিত ক্ষমতার প্রতীক।