নিজের বা প্রিয়জনের ছবি তুলে পছন্দমতো সেগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এখনকার জনপ্রিয় ট্রেন্ড। কিন্তু নিজের ছবি শেয়ার করার অপরাধে জেল বা চাবুক মারার মতো শাস্তির কথা কখনো শুনেছেন? অথচ সেরকমই শাস্তির মুখে পড়েছেন সৌদি আরবের এক তরুণী। তার অপরাধ, তিনি বোরখা ছাড়া নিজের একটি ছবি টুইটারে শেয়ার করেছিলেন।
জানা গেছে, সৌদি আরবের রিয়াদে বসবাসকারী মলক আল সহরি নামের ওই তরুণী কয়েকদিন আগে নিজের একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেন। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, ২০-২৫ বছর বয়সি মলক রিয়াধের আল-তাহালিয়া স্ট্রিটে একটি নামকরা ক্যাফের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। পরণে রঙচঙে স্কার্ট এবং কালো জ্যাকেট। সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে। সেই ছবিটি তিনি পোস্ট করেছিলেন টুইটারে। তারপরেই টুইটারে ঝড় ওঠে।
বহু মানুষ যেমন তার এই ছবিটির প্রশংসা করেন, তেমনই অনেক সৌদিবাসী আবার মলকের বিরুদ্ধে চরিত্রহীনতার অভিযোগ তোলেন। তার কিছুদিন পরেই পুলিশ মলককে গ্রেফতার করে। আপাতত তিনি জেলে বন্দি রয়েছেন। সৌদি আরবের আইন অনুসারে, বিচারে মলককে একশো কিংবা তারও বেশি ঘা চাবুক মারার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
এ বিষয়ে রিয়াদ পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, ‘মলকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। আমাদের সন্দেহ, মলক ব্যভিচারিণী। মলকের ছবির নীচে অনেক পুরুষই তার শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে মন্তব্য করেছে। এটি তার চরিত্রহীনতার প্রমাণ। এছাড়া তার শাস্তির দাবি উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। অনেকেই মলকের কৃতকর্মের জন্য তার মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে।’
নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য সৌদি আরবের কুখ্যাতি রয়েছে। নারীর স্বাধীনতা খর্বকারী নানা আইন তো সেখানে চালু রয়েছেই, পাশাপাশি রয়েছে নানাবিধ উদ্ভট লোকাচার ও সামাজিক নিয়মও। সে ধরনের নিয়মের অবলোপনের জন্য অনেকদিন ধরেই আন্দোলন চালাচ্ছে সৌদির মানবাধিকার সংগঠনগুলি। কিন্তু অবস্থা পরিবর্তনের আশা যে এক্ষুণি তেমন দেখা যাচ্ছে না, মলকের গ্রেফতারির ঘটনা তারই প্রমাণ।