আধিপত্যে নীরব থাকবেন, নাকি সরব হবেন?

follow-upnews
0 0

সবসময় ম্রিয়মান এবং নিপীড়িত হয়ে থাকতে কেউ-ই চায় না। সবাই প্রভাব বিস্তারকারী কিছু করতে চায়। কিন্তু কিছু করা তো খুব কঠিন। সাধ্য-সাধনার বিষয়, সবাই বিশেষ কিছু করতে পারে না বলেই আধিপত্যের কিছু কৌশলী জায়গা তৈরি করে নেয়, আবার পদাধিকারের বলে সমাজে এবং রাষ্ট্রকাঠামোয় আধিপত্যের জায়গা রয়েছে।

কাজের আধিপত্য এবং ক্ষমতার আধিপত্য —আধিপত্যের এরকম ভাগ তো রয়েছেই, পাশাপাশি আছে বৈধ এবং অবৈধ্য আধিপত্য। প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয়, নিষ্ঠুর অথবা শান্ত —আধিপত্যবাদ এরকম অনেকভাবেই বিশ্লেষণ করা যায়। তবে আলোচনার বিষয় এখানে নীরব এবং সরব আধিপত্য।

অপরাধে নীরব থাকা নিন্দনীয় কিন্তু ক্ষমতা প্রদর্শনে নিরবতার শক্তি মহাকাল স্বীকার করে। এই বিষয়ে মনীষীদের বিস্তার গুরুত্বপূর্ণ উক্তি রয়েছে। এ সম্পর্কে লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির উক্তিটিই স্মরনীয়। তিনি বলেছেন, “নীরবতার চেয়ে বেশি কর্তৃত্ব আর কিছুতেই হয় না।”

পরিবার থেকে রাষ্ট্র সর্বত্রই ক্ষমতা প্রদর্শনের নজির রয়েছে। তার আয়ে চলে বলে পরিবারে অহেতুক হম্বিতম্বি করে এমন লোক কম নয়, অফিশে অহেতুক কথায় কথায় কর্তৃত্ব জাহির করে এমন জনাব-ই তো বেশি।

সমাজে তো আছেই, রাজনীতির সাথে যুক্ত থেকে কেউ অবৈধ্য আধিপত্য দেখায়, কেউ টাকার বলে জোর খাটায়। পাশাপাশি কৌশলী আধিপত্যবাদও রয়েছে, সেগুলি হচ্ছে উচ্চ শিক্ষিতের আধিপত্যবাদ।

সরব আধিপত্যের নমুনা সমাজে ভুরি ভুরি। ছোট্ট পেয়ে হোটেল বয়ের সাথে ধমকের সুরে কথা বলাটাও আধিপত্যবাদ। ছোট ভাইকে কারণে অকারণে সবসময় শাসন করা আধিপত্যবাদ। সবসময় স্ত্রীকে আদেশ করতে থাকলে ভালোবাসার দাবী সেখানে শুধু অজুহাত হিসেবেই থাকে, আসলে তা সামাজিক আধিপত্যবাদ।

নীরবতা যে সবসময় খুব ভালো তাও নয়। নীরবতা বিষয়ে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের বিখ্যাত একটি উক্তি আছে। তিনি বলেছেন, “শেষ পর্যন্ত শত্রুদের সরবতা আমাদের মনে থাকবে না, মনে থাকবে বন্ধুদের নীরবতা।” উনি বুঝিয়েছেন, যে সময় বন্ধুদের পাশে দাঁড়ানো কথা ছিল, তখন তারা দাঁড়ায়নি।

নীরবতা ঋণাত্মক আধিপত্যবাদও হতে পারে। ‘খুন করা’ সরব, কিন্তু ‘খুন করানো’ তো নীরব। এতো এতো পণ্য, এতো এতো ব্যবসা, কিন্তু কয়জন মালিকের নাম আমরা জানি? কিন্তু এরা সমাজের প্রভাবশালী মানুষ, এবং প্রভাব তারা খাটাচ্ছেও। কেউ ভালোর জন্য প্রভাব খাটাচ্ছে, কেউ হয়ত শুধু মন্দটাই করে চলেছে নীরবে।

তবে নীরব আধিপত্যের সৌন্দর্যের নজিরও আছে অনেক। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে ছদ্মনামে লেখালেখির বিষয়টি বলা যায়। লেখা শক্তিশালী এবং প্রভাব বিস্তারকারী। ব্যক্তি নয়, ব্যক্তি গৌণ থেকে বিষয়কে মূখ্য করে তোলা যায়। নইলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও অনেক সময় ব্যক্তির পরিচিতির বা অপরিচিতির কারণে গৌণ হয়ে যায়।

আড়ালে থেকে ভালো কাজ করতে পছন্দ করেন এমন মানুষ খুব বেশি নেই, তবে কমও থাকে না একেবারে। অন্তর্মুখী কিছু মানুষ সমাজে আছে, যাদের অন্তর্নীহিত শক্তি অনেক বেশি, তবে তারা তা লুকাতে চায়, সচেতনে এক সময় বুঝে যায় যে, কাজ করতে হলে, ভালো কিছু করতে হলে লুকাতে হবে, কারণ, ব্যক্তি আড়াল হতে পারলে কাজটা দ্রুত এগিয়ে যায়, সর্বজন গ্রহণযোগ্যতা পায়, নইলে ব্যক্তি হিংসা-বিদ্বেষের শিকার হতে পারে, অবেহেলার শিকার হতে পারে, ইত্যাদি নানান কারণে কাজটা পিছে পড়ে যেতে পারে।


দিব্যেন্দু দ্বীপ

 

Next Post

MBA (Executive) ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে আইবিএ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Criteria for Eligibility: Minimum Bachelor’s degree(any discipline) For all foreign certificates/degrees, equivalence is determined by the Equivalence Committee of IBA. Without such equivalence, the applicants are not allowed to sit for the admission test. No 3rd division/class(or equivalent CGPA) at secondary/higher secondary/ bachelor’s level(s) of education Job Experience: Minimum 3 (three) years […]