ফেসবুক থেকে: “কজন ইহুদি-খ্রিস্টানকে হত্যা করবে?” তসলিমা নাসরিন

follow-upnews
0 0

দিল্লি থেকে ঈদের কেনাকাটা করে দুই ভাই হাফিজ আর শাকির, আর তাদের সঙ্গী মঈন আর মহসিন চড়েছিল মথুরার ট্রেনে, যাবে হরিয়ানার বল্লভগড়ে, তাদের গ্রামের বাড়িতে। ট্রেনের যে কামড়ায় ওরা ছিল, সেখানে একদল যাত্রী ওদের দেশদ্রোহী আর গরুখেকো বলে গালাগালি করলো। ওদের টুপি খুলে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে মাড়ালো। এর পর শুরু হলো গণপিটুনি। শেষে ছুরি দিয়ে কোপানো হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় ১৬ বছর বয়সী হাফিজের। মঈন, মহসিন এবং বড় ভাই শাকির গুরুতর আহত হয়ে এখন হাসপাতালে।

মুসলমান যেহেতু, গোমাংস নিশ্চয়ই খায়, এই সন্দেহে মুসলমানদের অনেকদিন থেকেই এরকম মারছে হিন্দু কট্টরপন্থীরা। যেন গো-হত্যা না করে, বিজেপি-আরএসএসের লোকেরা গরুর দুধ খাইয়ে দরিদ্র মুসলমানদের দুদিন আগে ইফতার করিয়েছে। গরুর দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারটা ভালো। এভাবে দুধ খাইয়ে ওদের গো-হত্যা না করার জন্য অনুরোধ করা যায়। কিন্তু কেউ গোমাংস খেলে তাকে হামলা করার অধিকার কারোরই নেই।

গো-রক্ষা করো ভালো কথা। কিন্তু মানুষ-রক্ষাও তো করতে হবে। মানুষকে মেরে গো-রক্ষা কতটা হয় জানি না, তবে ধর্ম-রক্ষা কিন্তু একেবারেই হয় না। গরু যদি তোমার মা, পৃথিবীর সব গরুই তোমার মা। ওদিকে যে ইউরোপ আমেরিকায় প্রতিদিন গরু খাচ্ছে মানুষ, ওদের ক’জনকে মারবে? কজন ইহুদি-খ্রিস্টানকে হত্যা করবে? নাকি ভারতের মুসলমান গরিব বলেই, ওদের মারা সহজ বলেই , ওদের মারো!


Taslima Nasreen

Next Post

আবার যেন এক জন্ম হয় এ জীবনে

♣♥♦ পাড়ি দিতে হবে আরো কিছু দূর, এই লোকালয় ছাড়িয়ে, ভালোবাসা ক্ষমা ঘৃণা দুর্বলতা হতে —যেখানে কিছু নেই অনুভূতি এত। যত দূরে গেলে মেলে অচেনা পথ— আবার যেন এক জন্ম হয় এ জীবনে আপন ঔরসে অন্যলোকে। ♣♥♦ কিছুই হলো না, শুধু এলোমেলো একটা জীবন হলো। কিছুই হলো না, অবশেষে ‍শুধু […]
পরকাল