যেভাবে ছোটদের জন্য গল্প লিখবেন ।। বিক্রম আদিত্য

follow-upnews
0 0
লিখতে দরকার হয় কল্পনাশক্তি, ভালো বলতে পা সৃষ্টিশীলতা এব মতো করে সবকিছু মনোযোগী অনুশ মাধ্যমে সবার পক্ষেই গল্প লেখার কৌশল আয়ত্ত করা সম্ভব।

১. # গল্পের কাহিনি
একটা ভালো বই লেখার পূর্বশর্ত হচ্ছে কাহিনি। পছন্দসই কিছু শিশুদের বই পড়ুন। পড়ার বিকল্প কিছু নেই। আর তাই একটি ভালো কাহিনির জন্যে অনেক বেশি পড়ুন এবং সেটাই করুন যেটা আপনার কাছে ঠিক বলে মনে হয়।
রহস্য, কৌতুক, অ্যাকশন অথবা আপনার আগ্রহের সাথে মিলে যায় এমন যে কোনো বিষয় বেছে নিন। এ কাজে আপনি হেল্প নিতে ারেন বাসার বাচ্চা বাচ্চা সদস্যদের কাছ থেকে।
তাদের নানা বিষয়ে জিজ্ঞেস করুন। জানতে চান তারা চারপাশ সম্পর্কে কেমন করে ভাবছে।
যেমন তাদের জিজ্ঞেস করতে পারেন, বিড়াল কেন ইঁদুর দেখলে তাড়া করে? তারা যে উত্তরটা দেবে স চিন্তার সাথে একদমই হয়তো মিলবে না। মাঝে মাঝে হয়তো আপনা হাসিও পাবে। কিন্তু এই ছোট ছোট জানতে চাওয়াগুলিই আপনাকে নিয়ে যাবে শি মানসিকতার কাছাকাছি।
শিশুতোষ কিছু লিখতে যাওয়ার অনেক বড় একটা সুবিধা হচ্ছে এর অবাস্তবতা। শিশুরা অনেকটাই কল্পনার জগতে থাকতে ভালোবাস মানুষের দুটি হাতের বদলে চারটা হাত আছে এমন গল্প ওদের ভালো লাগে বেশি।
বাস্তবতার সাথে কল্পনার ইচ্ছেমতন মিশেলে লেখা যায় একটা শিশুতোষ বই। আর তাই শিশুদের জন্য লিখতে হলে কী হতে পার কী হতে পারে না — এমন করে আলাদা করে কিছু মাথায় রাখতে হয় না। বরং লেখা যায় যা-ইচ্ছে-তাই ভাবে মনের মতন করে।

২. # চরিত্র
একটা ভালো গল্পের জন্যে আপনার দরকার হবে কিছু ভালো চরিত্রের। চরিত্র একটাও হতে পারে। আবার বেশিও হতে পারে।
চরিত্র হিসেবে ধরা যেতে পারে পশু, পাখি, কাল্পনিক জীব-জন্তু অথবা এর সবগুলিকেই। তবে খেয়াল রাখতে হবে চরিত্রগুলি আ কাহিনির সাথে মিশ খাচ্ছে কিনা।
এর জন্যে আপনাকে পড়তে হবে অনেক বই। যেমন, জে. কে. রাওলিং এর হ্যারি পটার পড়তে পারেন আপনি। এর চরিত্রগুলি হয়তো আপনার বইয়ের চরিত্রের সাথে মিলবে না। তবে সেগুলি আপনার চিন্তার পরিসর বাড়িয়ে দেবে অনেক বেশি।

৩. # বয়স
গল্প লেখার আগে পাঠকের বয়স মাথায় রাখতে হবে আপনাকে। যেমন খুব ছোট বাচ্চারা জটিলতাহীন সহজ কথাগুলিই বেশি পড়তে পছন্দ করে। যেমন, এক দেশে এক রাজা ছিল। রাজার একটা রানি ছিল ধরনের সহজ কথা।
আর কিছু বাচ্চা আছে যারা বাড়ত করেছে এবং নিজেদেরকে আর বাচ্চা বলতে পছন্দ করে না। তারা চায় তাদের বইয়ে যেন খুব বেশি সহজ ব্যাপার না থাকে। এদের জন্যে লেখাটা বেশ সোজা হলেও একদম ছোটদের উপযোগী সহজ কিছু লেখা বেশ কষ্টসাধ্য। আর তাই এ ক্ষেত্রে মেনে চলতে হবে দুটি নিয়ম:

বয়স ৩-৫: এই বয়সী শিশুদের জন্য গল্পে খুব ছোট ছোট ও সহজ কথা ব্যবহার করুন।তাদের পরিচিত ব্যাপারগুলিকেই সামনে নিয়ে আসুন। যেমন, ঝগড়া না করা, ঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া, সত্যি কথা বলা, বাবা-মাকে সব কথা বলা ইত্যাদি সহজ বিষয়কেই সামনে নিয়ে আসুন পরী, রাজা-রানি, ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমি, ডাইনি, জাদুকরসহ তাদের মনোযোগ আকর্ষণকারী চরিত্রের মাধ্যমে।
বয়স ৫-৭: খানিকটা বড়ও জটিল শব্দ ব্যবহার করুন।তবে সাবধান থাকুন যে সেটা যেন এতটা জটিল না হয় যে শেষ পর্যন্ত পাঠক বুঝতেই না পেরে হতাশ হয়ে পড়ল! নতুন কিছু করা, অ্যাকশন-থ্রিলার, নতুন কিছু শেখাসহ রোমাঞ্চকর সব ব্যাপার যেমন বাসা থেকে পালিয়ে য ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে যেগুলি তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে।

৪. # খসড়া তৈরি
যদি খুব বেশি কম বয়সীদের জন্য না লিখতে চান তাহলে গল্পের একটা খসড়া তৈরি করে ফ গল্পের শুরু, মাঝখান ও শেষটা কেমন হবে সেটা এঁকে বা লিখে
প্রতিটি গল্পেরই প্রথম থেকে শেষ অব্দি এর চরিত্রগুলির ভেতরে বিভিন্ন ঘটনা তৈরি হয়। কিছু চরিত্র শেষ পর্যন্ত থাকে। কিছু হারিয়ে যায়। আবার গল্পের মাঝখানে কিছু নতুন চরিত্র জন্ম নেয়।
এভাবেই একটি গল্পের হ্যাপি এন্ডিং হয়। এই ব্যাপারগুলি কখন হবে, কীভাবে হবে সেটা আগে মাথায় রাখা উচিত। আর তাই কিছু কাজ গল্প লেখা শুরু করার আগেই লিখে নেওয়া উচিত।

ক) গল্পের প্রতিটি চরিত্রের নাম, আচার-আচরণ, বর্ণনা, তাদের পরিবেশ ও তাদের পরিচিতজনদের সম্পর্কে লিখে নেওয়া।
খ) সমস্যা, রহস্য বা গল্প যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হবে সেগুলি কখন হবে, কেন হবে, কার-কার মধ্যে হবে সেগুলি লিখে
গ) গল্পের মূল আকর্ষণ কখন শুরু হবে অর্থাৎ এরমূল চরিত্রগুলি কখন মুখোমুখি হবে সেটা লিখ
ঘ) গল্পের চরিত্রেরা কীভাবে বিভ সমস্যার মোকাবেলা করে এবং এর কী হয় সেটা লিখে নেওয়া।

৫. # বিচক্ষণতা
খেয়াল রাখুন যেন আপনার গল্প বলার ধরনটি চৌকস হয়। শিশুতোষ হলেও সেটা যেন সবাইকেই আকর্ষণ করে। এর জন্যে মাঝে মাঝেই গল্পের চরিত্রদের কথা-বার্তার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিন তারা কেমন।
যেমন, “রুম্পা রাগী”, এটা না বলে “মা রুম্পাকে ও নিজের প্রিয় খেলনাটা ভেঙে ফেলল।” এভাবে বলুন। একই রকম ঘটনাকে গল্পের একেকজন চরিত্র একেক রকমভাবে কী করে ভাবছে মাধ্যমে তাদের মধ্যকার ভিন্নতাকে তুলে ধরুন।

৬. # ছবি
যদি আপনি আঁকতে ভালো তাহলে গল্পের সাথে সাথে ছবিও জুড়ে দিন। এতে আপনি আরো ভালো বক্তব্য বোঝাতে পারবেন খুদে পাঠকদের। আর সেটা না পারলে সাহায্য নিন পেশাদার আঁকিয়েদের।

[সুত্র: উইকি হাও]যেভাবে ছোটদের জন্য গল্প লিখবেন

Next Post

জনগণের প্লাটফর্ম তাহলে কোনটা?

জনগণের মধ্য থেকে দেশ-সামজ-রাজনীতি নিয়ে ভাবছে এমন লোকদের খুঁজে খুঁজে বের করে একেবারে তৃণমূলে গিয়ে কাজ করতে হবে। শুধু শাহবাগে বসে ‘যুদ্ধাপরাধীরে বিচার চাই’ বলে সবটুকু লাভ হবে না, সে লাভ ক্ষণিকের, জনগণের জন্য রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা করতে চাইলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে হবে।
Ganojagoron