মার্টিন লুথার কিং-এর কালজয়ী ভাষণ: “আমার একটি স্বপ্ন আছে”

follow-upnews
1 0

“আই হ্যাভ এ ড্রিম” একটি গণ-বক্তৃতা, যা আমেরিকান নাগরিক অধিকারকর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ওয়াশিংটন অভিমুখে কর্মের অধিকার এবং স্বাধীনতার জন্য গণযাত্রা চলাকালীন দিয়েছিলেন। এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি নিগ্রোদের নাগরিক এবং অর্থনৈতিক অধিকার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদের অবসান ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। ওয়াশিংটনের লিংকন মেমোরিয়ালের পাদদেশে সেদিন বক্তব্যটি তিনি দিয়েছিলেন কমপক্ষে আড়াই লক্ষ নাগরিক অধিকারকর্মী এবং তাদের সমর্থকদের সামনে। এই ভাষণটিকে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের একটি নির্ধারক মুহূর্ত এবং আমেরিকান ইতিহাসে সবচেয়ে দৃষ্টান্তমূলক এবং প্রেরণাদায়ক ভাষণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

মার্টিন লুথার কিং
আগস্ট ২৮, ১৯৬৩, লিঙ্কন মেমরিয়ালে কানায় কানায় ভরা জনতার সামনে “আমার একটি স্বপ্ন আছে” খ্যাত মার্টিন লুথার কিং-এর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ। “চাকরি এবং স্বাধীনতা”র দাবীতে সংগঠিত ঐতিহাসিক মিছিলে দুই লক্ষাধিক মানুষ সেদিন জড়ো হয়েছিল। এই পদযাত্রা জন এফ কেনেডি প্রশাসনের ওপর কংগ্রেসে একটি শক্তিশালী ফেডারেল নাগরিক অধিকার বিল প্রবর্তনের জন্য চাপ প্রয়োগে সফল হয়েছিল। ছবিঃ হিস্টোরি.কম

 

 

 

আমার একটি স্বপ্ন আছে

আজ এমন একটি দিনে আপনাদের সাথে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত, স্বাধীনতার জন্য এই দিনের এই চূড়ান্ত প্রদর্শনী ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।

একশো বছর আগে একজন মহান আমেরিকান মুক্তির ঘোষণাতে স্বাক্ষর করেছিলেন, যার প্রতীকী ছায়ায় আমরা আজ দাঁড়িয়ে আছি। যুগান্তকারী এ আইনটি ঘৃণ্য অবিচারের আগুনে ভীত-সন্ত্রস্থ করে রাখা  লক্ষ লক্ষ নিগ্রো ক্রীতদাসদের কাছে এক অসামান্য আশার আলো হয়ে এসেছিল। তাদের বন্দীদশার দীর্ঘ রাতটি শেষ করতে এটি একটি আনন্দদায়ক দিবস হয়ে এসেছিল।

মুক্তি ঘোষণার পর একশো বছর পেরিয়ে গেলেও নিগ্রোরা এখনও মুক্ত নয়। একশত বছর পরেও, দুঃখজনকভাবে নিগ্রোদের জীবন এখনও বিচ্ছিন্নতা এবং বৈষম্যের শৃঙ্খলে পঙ্গু হয়ে আছে। একশো বছর পরে এসে জাগতিক বিশাল সমৃদ্ধির সমুদ্রের মাঝে এখনও নিগ্রোরা দারিদ্র্যের একাকী একটি দ্বীপে বাস করে। একশো বছর পরে এখনও নিগ্রোরা আমেরিকান সমাজের বিভিন্ন প্রান্তে বিলীন এবং নিজেদের তারা নিজ দেশে নির্বাসিত অবস্থায় খুঁজে পায়। এবং তাই আজ আমরা এখানে এই লজ্জ্বাজনক পরিস্থিতির চূড়ান্ত রূপ দেখতে এসেছি।

এক অর্থে আমরা রাজধানীতে এসেছি একটি চেক ভাঙাতে। যখন আমাদের প্রজাতন্ত্রের স্থপতিরা সংবিধান এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের অসাধারণ শব্দগুলি লিখেছিলেন, তারা একটি প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করছিলেন যাতে উত্তরাধিকার রয়েছে আমেরিকার প্রতিটি নাগরিকের। এই ঘোষণাপত্রটি একটি প্রতিশ্রুতি ছিল যে, সমস্ত মানুষ— হঁ্যা, সাদা মানুষদের পাশাপাশি কালো মানুষদের জীবনেও অবাধ অধিকার, স্বাধীনতা এবং সুখ অন্বেষণের নিশ্চয়তা থাকবে। এ পর্যন্ত আমেরিকা তার সে অঙ্গিকার পালনে ব্যর্থ হয়েছে— নানান বর্ণের লোকেদের এখনও এখানে উদ্বিগ্ন হয়ে বাঁচতে হয়। পবিত্র সে দায়িত্বকে অটুট রাখার পরিবর্তে আমেরিকা নিগ্রো মানুষদের একটি খারাপ চেক দিয়েছে, এটি এমন একটি চেক যা বারে বারে অপর্যাপ্ত তহবিলের বিপরীতে ফিরে এসেছে।

আমরা এটা বিশ্বাস করতে চাই না যে, আমাদের ন্যায়বিচারের ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে। এ জাতির সুযোগের কোষাগারে ভাটা পড়েছে সেটি আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। আমরা তা জানি বলেই চেকটা ভাঙাতে এসেছি, এটি এমন একটি চেক যার বিপরীতে আমরা সম্পদ হিসেবে স্বাধিনতা এবং সুবিচারের নিশ্চয়তা পাব।

বিষয়টির গুরুত্ব আমেরিকাকে মনে করিয়ে দিতে আজ আমরা এই পবিত্র জায়গায় জড়ো হয়েছি। হাল্কা হাওয়ায় গা জুড়ানোর বিলাসিতা বা ধীরে ধীরে প্রশান্তির ওষুধ সেবন করার মতো সময় আর এখন হাতে নেই। গণতন্ত্রের প্রকৃত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার সময় এখন। এখন সময় বিভাজনের অন্ধকার ও জনশূন্য উপত্যকা থেকে জাতিগত ন্যায়বিচারের সূর্যালোকিত পথে উঠে আসার। জাতিকে অবিচারের চোরা বালি থেকে তুলে এনে ভ্রাতৃত্বের কঠিন শিলার উপর স্থাপনের এখনই সময়। ঈশ্বরের সব সন্তানের জন্য ন্যায়বিচার সত্যে পরিণত করার এটাই শ্রেষ্ঠ সময়।

এ সমাবেশের গুরুত্ব বুঝতে ব্যর্থ হলে সেটি এ জাতির জন্য ভয়ানক হবে। নিগ্রোদের বৈধ অসন্তোষের ঘর্মাক্ত এই গ্রীষ্মকালটি দূর হবে না যতক্ষণ স্বাধীনতা এবং সাম্যের একটি সুন্দর শরৎকালীন উদ্দীপনা তৈরি হয়। এই সমাবেশটিই সব কথার শেষ কথা নয়, বরং এটা কেবল শুরু। এবং যারা আশা করেন যে, নিগ্রোদের ক্রোধের কিছু বাষ্প উড়ানোর দরকার ছিল এবং এখন তারা সন্তুষ্ট হয়ে থাকবে, এটা ভেবে এ জাতি যদি যথারীতি নিজ নিজ কাজে ফিরে ফিরে যায়, তবে এর পরের জাগরণটি অবশ্যই এতটা শান্তিপূর্ণ হবে না। আমেরিকাতে নিগ্রোদের নাগরিকত্বের সকল অধিকার না দেওয়া পর্যন্ত কোথাও কোনো শৃঙ্খলা এবং প্রশান্তি বিরাজ করবে না। ন্যায়বিচারের উজ্জ্বল দিন উদিত না হওয়া পর্যন্ত বিদ্রোহের ঘূর্ণিবায়ু আমাদের জাতির ভিত্তি কাঁপিয়ে দিতে থাকবে।

আমার সেইসব লোকেদের অবশ্যই কিছু বলার আছে যারা তপ্ত বালুর উপর দাঁড়িয়ে আছো ন্যায়বিচারের প্রাসাদে পৌঁছানোর প্রত্যাশায়: যথাযোগ্য স্থানে পৌঁছুতে গিয়ে অবশ্যই আমাদের কোনো ভুল কাজের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়া চলবে না। আমরা যেন তিক্ততা ও বিদ্বেষের পেয়ালা থেকে পান করে স্বাধীনতার তৃষ্ণা মেটাতে চেষ্টা না করি। অবশ্যই সবসময় আমরা আমাদের সংগ্রামকে মর্যাদা ও শৃঙ্খলার উচ্চ আসনে রেখে পরিচালিত করব। অবশ্যই আমরা আমাদের সৃজনশীল প্রতিবাদকে শারীরিক সহিংসতায় পরিণত হতে দেব না। শারীরিক শক্তির সঙ্গে আত্মিক শক্তির সম্মিলনে বারবার আমরা সে সুমহান উচ্চাতায় পৌঁছে যাব। যে নতুন জঙ্গিবাদ নিগ্রো সম্প্রদায়কে গ্রাস করেছে তা যেন সমস্ত সাদা মানুষকে আমাদের ওপর অবিশ্বাসের তীর ছুড়তে বাধ্য না করে। আজকে এখানে তাদের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, তাদের ভাগ্য এবং আমাদের ভাগ্য একই সূত্রে গাঁথা। এবং তারা একথা বুঝতে সম্মত হয়েছে— তাদের স্বাধীনতা ওতপ্রোতভাবে আমাদের স্বাধীনতার সাথে আবদ্ধ। আমরা কেউ একা চলতে পারি না।

এবং চলতে চলতে আমাদের অবশ্যই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে— আমরা আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখব। আমরা ফিরে যেতে পারি না। যারা আমাদের সহযাত্রীদের কাছে জানতে চায়, “কীসে তোমরা সন্তুষ্ট হবে?” আমরা কখনও সন্তুষ্ট হব না যতক্ষণ পর্যন্ত নিগ্রোরা পুলিশের অকথ্য এবং ভয়ঙ্কর বর্বরতার শিকার হতে থাকবে। আমরা ততক্ষণ সন্তুষ্ট হতে পারি না যতক্ষণ না আমাদের ভ্রমণক্লান্ত দেহগুলি মহাসড়কের মোটেল এবং শহরের হোটেলগুলিতে থাকার অধিকার পাবে। আমরা ততক্ষণ সন্তুষ্ট হতে পারি না যতক্ষণ না নিগ্রোদের গন্তব্য ছোট বস্তি থেকে বড় বস্তির ঘেরাটোপ থেকে বের হতে পারে। আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত সন্তুষ্ট হতে পারি না যতক্ষণ প্রতীক দিয়ে সাদাদের আলাদা করে নিগ্রো শিশুদের নিজস্বতা এবং মর্যাদা হরণ করা হয়। আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত সন্তুষ্ট হব না যতদিন মিসিসিপির নিগ্রোরা ভোটাধিকার পাবে না এবং নিউইয়র্কের নিগ্রোরা ভোট দেওয়ার মতো বিশ্বস্ত কাউকে পাবে না। না, না, আমরা সন্তুষ্ট নই এবং আমরা সন্তুষ্ট হব না যতক্ষণ না ন্যায়বিচার পানির মতো প্রবাহমান এবং ন্যায়পরায়ণতা তীব্র স্রোতের মতো শক্তিশালী হয়।

এটি আমার কাছে অজ্ঞাত নয় যে, এখানে তোমরা অনেকে অনেক কায়-ক্লেশের মধ্য দিয়ে এসেছো। তোমরা কেউ কেউ কারাগারের সরু প্রকোষ্ট থেকে কেবল ছাড়া পেয়ে এসেছো। কেউ কেউ এমন অঞ্চল থেকে এসেছো যেখানে তোমার স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা তোমাকে অত্যাচারী ঝড়ের কবলে ফেলে দিয়েছিল এবং পুলিশি নৃশংসতার ঝড়ো বাতাস তোমাকে টালমাটাল করে দিয়েছিল। তোমরা সৃজনশীল কষ্টের অভিজ্ঞ যোদ্ধা হয়েছো। এই বিশ্বাস নিয়ে কাজ চালিয়ে যাও— যে কষ্ট মূল্য পায় না তা মানুষকে শৃঙ্খলমুক্ত করে। মিসিসিপি ফিরে যাও, আলবামায় ফিরে যাও, দক্ষিণ ক্যারোলিনা ফিরে যাও, জর্জিয়া ফিরে যাও, লুইসিয়ানা ফিরে যাও, উত্তরাঞ্চলের ছোট বড় বস্তিগুলোতে ফিরে যাও, শুধু জেনে যাও— যেভাবেই হোক এ অবস্থার অবসান হবে। আমরা যেন হতাশার উপত্যকায় অধঃপতিত হয়ে না পড়ি।

আমি তোমাদের আজ বলছি, বন্ধুরা, আমরা আজ এবং আগামীকালও হয়ত বাঁধার সম্মুখিন হব, তবুও সে স্বপ্নটি একই থাকবে। এটি সে স্বপ্ন যার মধ্যে সমগ্র আমেরিকার স্বপ্নটি প্রথিত।

আমি স্বপ্ন দেখি এ জাতি একদিন জেগে উঠবে এবং ধর্মবিশ্বাসের প্রকৃত সত্যকে বাস্তব জীবনে প্রতিষ্ঠিত করবে: “আমরা এই সত্যকে স্বতঃসিদ্ধ বলে স্বীকার করি— সকল মানষকে সমান করে সৃষ্টি করা হয়।”

আমি স্বপ্ন দেখি— জর্জিয়ার লাল পাহাড়ে একদিন পূর্বের দাসের ছেলেরা এবং পূর্বের দাস মালিকদের ছেলেরা ভ্রাতৃত্বের টেবিলে একসাথে বসতে পারবে।

আমি স্বপ্ন দেখি– একদিন এমনকি মিসিসিপি রাজ্য, অত্যচার এবং অবিচারের উত্তাপে ঘর্মাক্ত একটি রাজ্য, স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের একটি মরূদ্যানে রূপান্তরিত হবে।

আমি স্বপ্ন দেখি— আমার চারটি শিশু সন্তান একদিন এমন এক দেশে বাস করবে যেখানে তাদের গায়ের রঙ দিয়ে নয় বরং তাদের বিচার করা হবে চারিত্রিক বৈশিষ্ট দিয়ে। আমার এমন একটি স্বপ্ন আছে।

Martin Luther King
মাটিংন লুথার কিং-এর চার সন্তানের মধ্যে দুজনকে এখানে দেখা যাচ্ছে। ছবিঃ গেটি ইমেজ।

আমার স্বপ্ন দেখি একদিন আলাবামায়, যেখানে দুশ্চরিত্র বর্ণবাদী লোক রয়েছে, যেখানে গভর্নরের মুখ থেকে ‘আন্তঃব্যবস্থা’ এবং ‘বাতিল’ এ ধরনের শব্দ বের হয়, তা সত্ত্বেও সেখানে একদিন ঠিকই ছোট্ট কালো ছেলে এবং কালো মেয়েরা ছোট্ট সাদা ছেলে এবং সাদা মেয়েদের সাথে ভাই এবং বোন হিসেবে হাত মেলাতে সক্ষম হবে। আমার এমনই একটি স্বপ্ন আছে।

আমার যেমন স্বপ্ন আছে— একদিন প্রতিটি উপত্যকা উন্নত হবে, প্রতিটি পাহাড় ও পর্বত নীচু করা হবে, রুক্ষ স্থানগুলি সবুজ করা হবে এবং আঁকাবাঁকা জায়গাগুলি সোজা করা হবে, প্রভুর প্রকৃত মহিমা প্রকাশিত হবে এবং সমস্ত মানুষ একসাথে তা দেখতে পাবে।

এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এই বিশ্বাস নিয়েই আমি দক্ষিণে ফিরে যাই। এই বিশ্বাস নিয়েই আমরা হতাশার পর্বত থেকে প্রত্যাশার পাথর তুলে নিতে সক্ষম হব। এই বিশ্বাস নিয়ে আমরা আমাদের জাতির বিবাদ এবং মতবিরোধগুলি ভ্রাতৃত্বের একটি সুন্দর ঐকতানে রূপান্তর করতে সক্ষম হব। এই বিশ্বাস নিয়ে আমরা একসাথে কাজ করতে, প্রার্থনা করতে,  লড়াই করতে, কারাগারে যেতে সক্ষম হব, একসাথে স্বাধীনতার সপক্ষে দাঁড়াতে পারব, এটা জেনে— আমরা একদিন মুক্ত হবই।

এটা একদিন হবে, এমন একটি দিন আসবে যেদিন ঈশ্বরের সকল সন্তানেরা নতুন অর্থ সহ গান করতে সক্ষম হবে: আমার দেশ, তুমি এমনই, মুক্ত জীবনের পবিত্র ভূমি তুমি, আমি তোমারই গান করি। আমার পিতৃপুরুষেরা যে দেশে মারা গিয়েছেন, তীর্থযাত্রীদের অহংকারের দেশ, এ দেশের প্রতিটি পর্বত থেকে স্বাধীনতার সুর ধ্বনিত হোক।

আমেরিকা একটি মহান জাতি হতে হলে এটি সত্য হতে হবে। সুতরাং নিউ হ্যাম্পশায়ারের চমৎকার পাহাড় চূড়াগুলি থেকে স্বাধীনতার সুর বাজতে দাও। পেনসিলভেনিয়ার অ্যালগেনি পর্বতশৃঙ্গের চূড়া থেকে স্বাধীনতার সুর বেজে উঠুক। কলোরাডোর বরফাচ্ছাদিত স্নো কেপড্ রকিজ থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বেজে উঠুক। স্বাধীনতার ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হোক ক্যালিফোর্নিয়ার বক্রাকার ঢাল থেকে। কেবল তা নয়: জর্জিয়ার স্টোন পর্বত থেকেও স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক। টেনেসির লুকআউট পর্বতের ভাজ থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক। মিসিসিপির প্রতিটি ছোট বড় পাহাড় থেকে একই সুর বাজতে দাও। সকল সুউচ্চ জায়গা থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক।

এবং যখন এটা হবে, যখন সত্যিই আমরা স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজতে দেব, যখন আমরা প্রতিটি গ্রাম এবং পল্লীতে স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজতে দেব, প্রতিটি রাজ্য এবং প্রতিটি শহরে যখন তা একযোগে বেজে উঠবে, আমরা সেই দিনটিকেই তবে ত্বরান্বিত করতে পারব— যেদিন কালা এবং সাদা মানুষ, ইহুদি এবং বেধর্মী, প্রোটেস্ট্যান্ট এবং ক্যাথলিক সবাই একসাথে হাতে হাত ধরে নিগ্রোদের সেই পুরনো আধ্যাত্মিক গানটি গাইবে:

আমরা অবশেষে মুক্ত হলাম!

আমরা অবশেষে মুক্ত হলাম!

সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তোমাকে অসংখ্যা ধন্যবাদ,

সত্যিই আমরা অবশেষে মুক্ত হলাম!


ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন দিব্যেন্দু দ্বীপ

 

Next Post

বাবাকে নিয়ে স্মৃতিকথা // হাসনা হেনা

আষাঢ় মাসের মাঝ দুপুর। মধ্যরাত থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরছে। সকালে একবার সূর্যিমামা মেঘের ফাঁকে উঁকি মেরে আবার কোথায় যেন লুকিয়ে গেছে। কখনও টিপ টিপ কখনও মুশলধারে বৃষ্টি ঝরছে। মেঘের ভারে অবনত আকাশ। গুড়ুম গুড়ুম ডাকছে মেঘের পাল। চারপাশটা অদ্ভুত ভাবে আঁধার হয়ে আসছে। মাঝ দুপুরটাকেও মনে হচ্ছে যেন সাঁঝবেলা। […]