চমৎকার নিয়মে ঘড়ির কাঁটা সম্পর্কিত অংকগুলো দেখুন …

follow-upnews
0 0

সাম্প্রতিক প্রায় বিভিন্ন চাকুরির পরিক্ষায় এধরনের একটি প্রশ্ন থাকে যে, “ঘড়িতে যদি এতটা বাজে তাহলে ঘড়ির কাঁটা এবং মিনিটের কাঁটার মধ্যবর্তী কোণ কত ডিগ্রি?” অংকগুলো খুব সহজ যদি ঘড়ির হিসেবটা বোঝা যায়। অংকগুলো মুখে মুখেই করা যায়। 

চাকরির পরীক্ষা

এধরনের প্রশ্নের সমাধান করার আগে একবার ঘড়ির কথা ভাবুন।

  • পুরো ঘড়িটা একটা বৃত্তের মতো। তাহলে একটা বৃত্ত হলো ৪ টি সমকোণের সমান অর্থাৎ ৪ সমকোণ বা ৩৬০°।
  • একটি ঘড়িতে মোট সংখ্যা থাকে ১২ টা। তাহলে প্রতি ঘন্টার জন্য কোণ হবে (৩৬০°÷১২)=৩০°।
  • ঘড়িতে মিনিট থাকে ৬০টি তাহলে প্রতিটি মিনিটের জন্য কৌনিক ব্যবধান হবে ৬°।
  • অর্থাৎ, ৬০ মিনিট= ৩০ ডিগ্রী। অতএব, ঘণ্টার কাঁটার ক্ষেত্রে ১ মিনিট = (৩০/৬০) ডিগ্রী = ০.৫ ডিগ্রী ব্যবধান হবে।
  • একই সাথে ঘণ্টার কাঁটা আর মিনিটের কাঁটা ঘড়ির ১২ সংখ্যাটিকে নির্দেশ করলে, কোণ হবে শূন্য। যেমনঃ দুপুর ১২ টা।

মনে রাখতে হবে যে কৌণিক ব্যবধান কোনো সময় ১৮০° এর উপরে হতে পারবে না।

প্রশ্ন ১: ঘড়িতে যখন চারটা বাজে, ঘন্টার কাঁটা এবং মিনিটের কাঁটার মধ্যেকার কোণটি কত ডিগ্রি?

৪ টা

উত্তর: ১২০°।
ব্যাখ্যা : যখন চারটা বাজে তখন ঘন্টার কাঁটাটি ৪ টায় এবং মিনিটের কাঁটাটি ১২ টায় থাকবে। ফলে দুটো কাটার ব্যবধান হবে ৪। আগেই বের করেছি যে প্রতি ঘন্টার জন্য কোণের মান হবে ৩০°, তাই ৪ এর জন্য কোণের মান হবে (৩০°×৪)=১২০°।

প্রশ্ন ২: ঘড়িতে যখন আটটা বাজে, ঘন্টার কাঁটা এবং মিনিটের কাঁটার মধ্যেকার কোণটি কত ডিগ্রি?

৮ টা

উত্তর: ১২০°।
.
ব্যাখ্যা:  যখন ঘড়িতে আটটা বাজে তখন ঘন্টার কাঁটাটি ৮ টায় এবং মিনিটের কাঁটাটি ১২ টায় থাকবে। ফলে দুটো কাটার ব্যবধান হবে ৪। কেউ হয়ত ১২ থেকে ৮ টটা পর্যন্ত গুনে বলতে পারেন ব্যবধান ৮, কিন্তু এটা করা যাবে না কেননা তখন কোণটি ১৮০° এর চেয়ে বড় হয়ে যাবে, আগেই বলেছি কোণের মান ১৮০° চেয়ে বেশি হতে পারবে না, এজন্য ব্যবধান কখনোই ৬ এর বেশি হবে না। তাই ৮ থেকে ১২ পর্যন্ত ব্যবধান ৪ হবে। আগেই বের করেছি যে প্রতি ঘন্টার জন্য কোণের মান হবে ৩০°, তাই ৪ এর জন্য কোণের মান হবে (৩০°×৪)=১২০°।

প্রশ্ন ৩: যখন ঘড়িতে সারে এগারোটা বাজে, ঘন্টার কাঁটা এবং মিনিটের কাঁটার মধ্যেকার কোণটি কত ডিগ্রি?

সাড়ে এগারোটা

উত্তর: ১৬৫°।
ব্যাখ্যা:  যখন সারে এগারোটা বাজে তখন ঘন্টার কাঁটাটি ১১ এবং ১২ এর মাঝামাঝি অর্থাৎ ১১.৫ টায় এবং মিনিটের কাঁটাটি ৬ টায় থাকবে। ফলে দুটো কাটার ব্যবধান হবে ৫.৫। অনেকের মনে হতে পারে যে ব্যবধান তো ৬.৫ ও হতে পারে। হ্যাঁ হতে পারে, কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যবধান কখনোই ৬ এর বেশি হবে না, তাই যেদিক থেকে গুনলে ব্যবধান ৬ এর মধ্যে থাকে সেদিক থেকেই গুনতে হবে। আগেই বের করেছি যে প্রতি ঘন্টার জন্য কোণের মান হবে ৩০°, তাই ৫.৫ এর জন্য কোণের মান হবে (৩০°×৫.৫)=১৬৫°। 

শর্টকাট টেকনিক: (11×M – 6O×H)÷2
এখানে, M=মিনিট
H=ঘন্টা
উদাহরন: যদি ঘড়িতে ২ টা ৪০ মিনিট হয়, তবে ঘণ্টার কাটা ও মিনিটের কাটা কত ডিগ্রি কোন উৎপন্ন করে।
সূত্র: (11 × M – 6O × H)÷2, (এখানে M এর স্থানে মিনিট ও H এর স্থানে ঘন্টা বসাতে হবে)
সমাধান:
(11 × 4O–6O×2)÷2
= 160 (উঃ)
[বিঃদ্র: যদি কোনের মান 180° অতিক্রম করে(অর্থাৎ 180 ° চেয়ে বেশি হয়)তবে প্রাপ্ত মানকে ৩৬০ থেকে বিয়োগ করে কোন এর মান নির্নয় করতে হবে] 

এবার আরো কিছু অংক করা যাক:

ক) সময়ঃ সকাল ৯:০০ টা , কোণ কত?

(সকাল নাকি বিকাল- এটা কোন প্রভাব ফেলেনা; সকাল নয়টাতে যে কোণ, রাত নয়টায় তো একই কোণ হবে।)

 ১ ঘণ্টা = ৩০ ডিগ্রী। অতএব, ৯ ঘণ্টা = (৩০ * ৯) ডিগ্রী অথবা ২৭০ ডিগ্রী।

এখন আমরা কি ২৭০ ডিগ্রী কোনটি উত্তর হিসেবে নিব? না নিব না, কারণ, ১৮০ ডিগ্রি এর চেয়ে বেশি কোন নেব না। ফলে এক্ষেত্রে ৩৬০ ডিগ্রি থেকে বিয়োগ করে উত্তর বের করতে হবে। 

ছোট কোণ = (৩৬০ – ২৭০ ) ডিগ্রী = ৯০ ডিগ্রী। উত্তরঃ ৯০ ডিগ্রী । অর্থাত আমরা সবসময় অন্ত:স্থ কোনটি নিব, বহিস্থ কোনটি নিব না।

খ) সময়ঃ বিকাল ৫:০০ টা, কোণ কত?

১ ঘণ্টা  ব্যবধান = ৩০ ডিগ্রী। অতএব, ৫ ঘণ্টা ব্যবধান = (৩০ * ৫) ডিগ্রী = ১৫০ ডিগ্রী।

যেহেতু এটা ১৮০ এর চেয়ে কম, তার মানে এটাই ছোট কোণ। [অপর কোণটি (৩৬০ – ১৫০) ডিগ্রী = ২১০ ডিগ্রী, যেটি উত্তর হবে না। তবে কোনো ক্ষেত্রে যদি বহি:স্থ কোণের মান জানতে চায় সেক্ষেত্রে বড় কোনটিকে উত্তর হিসেবে নিতে হবে।]
উত্তরঃ ১৫০ ডিগ্রী।

গ) সময়ঃ বিকাল ২:৪৫ , কোণ কত?

পোনে তিনটা

১২টা থেকে ২টাতে যাওয়ার জন্য ঘণ্টার কাঁটার সরণ হয়েছে (দূরত্ব অতিক্রম করেছে)।

প্রথম ধাপ:

১ ঘণ্টা = ৩০ ডিগ্রী।  
২ ঘণ্টা = ৬০ ডিগ্রী। ……………. (১)

দ্বিতীয় ধাপ:

ঘণ্টার কাঁটার আরও সরণ হয়েছে
২ ঘণ্টার পর আরো ৪৫ মিনিটের জন্য আরো কিছু সরণ হয়েছে।

৬০ মিনিটের জন্য ঘণ্টার কাঁটা সরে ৩০ ডিগ্রী
অতএব, ১ মিনিটের জন্য ঘণ্টার কাঁটা সরে (৩০ / ৬০ ) ডিগ্রী অথবা ০.৫ ডিগ্রি ……… (২)
অতএব, ৪৫ মিনিটের জন্য ঘণ্টার কাঁটা সরে ০.৫ * ৪৫ ডিগ্রী = ২২.৫ ডিগ্রী

তৃতীয় ধাপ:

মিনিটের কাঁটারও সরণ হয়েছে−

মিনিটের কাঁটার ক্ষেত্রে,
৬০ মিনিট = ৩৬০ ডিগ্রী।
১ মিনিট = ৩৬০/৬০ বা ৬ ডিগ্রী। ……………….. (৩)
৪৫ মিনিট = ( ৬ * ৪৫ ) ডিগ্রী = ২৭০ ডিগ্রী

চতুর্থ ধাপ:

তাহলে, কোণ = ঘণ্টার কাঁটার সর্বমোট সরণ ও মিনিটের কাঁটার সরণের পার্থক্য…………………(৪)

[যে বড় তাকে আগে লিখবো]
কোণ = ২৭০ – ( ৬০ +২২.৫) = ১৮৭.৫ = ১৮৭.৫ ডিগ্রী
কিন্তু এটা বড় কোণ। আমাদের ছোট দরকার। অতএব, ছোট কোণ = ৩৬০ – ১৮৭.৫ ) ডিগ্রী = ১৭২.৫ ডিগ্রী
উত্তরঃ ১৭২.৫ ডিগ্রী

আমি যেভাবে করতে বলি

ঘণ্টার কাঁটা এবং মিনিটের কাঁটার মধ্যে পূর্ণ ঘর রয়েছে ৫টি + আংশিক ঘর রয়েছে।

যেহেতু প্রতি মিনিটের জন্য ১/২ ডিগ্রি কৌণিক ব্যবধান হয়, অতএব ৪৫ মিনিটের জন্য ২২.৫ ডিগ্রি কৌণিক ব্যবধান হবে।

অতএব, মোট কৌণিক ব্যবধান হবে = ৫*৩০+২২.৫° = ১৭২.৫ ডিগ্রি।

 

অনুশীলনী:

কোণ কত, যখন সময় –

ক) ৩:০০ টা, খ) ৬:০০ টা, গ) ১২:০০ টা, ঘ) ৭:০০ টা, ঙ) ১০:২৫ টা, চ) ০৮ : ২০ টা, ছ) ১১:৩০ টা, জ) ০১:১৫ টা ঝ) ০৯:৫০ টা, ঞ) ১২:৪৫ টা চ) ৯:৪৫ ছ) ১০:৫০ জ) ৩:৬৯

JoVEN JoB

ম্যাথ প্লে বইটি থেকে অংকগুলো সংগৃহীত।

 

Next Post

গরমে পোশাকে আনুন পরিবর্তন

গরম আসছে, এবার শীত একটু প্রলম্বিত হলেও, এখন গরম পড়তে শুরু করেছে। ফলে এখনই পোশাকের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া দরকার। গরমে পোশাক হওয়া চাই আরামদায়ক এবং কিছুটা ঢিলেঢালা। গরমকাল বলে আমাদের বাইরে ছোটাছুটি তো আর বন্ধ রাখার উপায় নেই। তাই ঘর্মাক্ত শরীর নিয়ে যাতে চলতে না হয় এজন্য সুতি পোশাক নির্বাচন […]
ঈশা ফ্যাশন