এরকম একটি আলোচিত সংবাদেরও প্রতিটি শব্দ এবং বাক্য বিবিসি বাংলা থেকে কপি করতে পারল দৈনিক কালের কণ্ঠ!

follow-upnews
0 0

মাশরাফির সাথে সেই ভক্তের মাঠে দৌঁড়ে গিয়ে দেখা করার উপর বিবিসি বাংলার নিউজটি হয়েছে রাত সাড়ে দশটার দিকে। কালের কণ্ঠ নিউজটি করেছে রাত বারোটার একটু পরে। যেহেতু নিউজের প্রতিটি শব্দ মিলে যাচ্ছে, তাই বলা যায় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকা বিবিসি বাংলার নিউজটি কপি করেছে। “এমন আলোচিত এবং সহজ একটি সংবাদ কপি করার কী কারণ থাকতে পারে যদি তা শুধু অভ্যসবশত না হয়?” প্রশ্ন একজন পাঠকের?

“মাশরাফি ভক্তের কাণ্ডে ক্রিকেট মাঠের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ” শিরোণামে বিবিসি বাংলা নিউজটি করে। তারা লেখে-

“বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের তৃতীয় একদিনের আন্তর্জাতিকটি উত্তেজনা হারাচ্ছিল।

এরই মধ্যে আফগানিস্তান সাতটি উইকেট হারানোয় এবং জয়ের লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে থাকায় বিজয়ের ক্ষণ গুনছেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা।

রাত ন’টা বাজতে কয়েক মিনিট বাকী আছে।

উনত্রিশতম ওভারের একটি বল করতে ছুটে আসছেন তাসকিন আহমেদ।

টেলিভিশনে যারা খেলাটি উপভোগ করছিলেন, তারা দেখলেন, তাসকিন বল ছুড়বার মুহুর্তেই অপর প্রান্তে থাকা আফগান ব্যাটসম্যান রশিদ খান হাত তুলে তাকে থামালেন।”

দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকাও ভিন্ন শিরোণামে একই কথা লেখে!

“মাঠে ঢুকে পড়া সেই ছেলেটি মেহেদী হাসান” শিরোণামে কালের কণ্ঠ নিউজ করে। শুরুতে তারা হুবহু বিবিসি বাংলা থেকে তুলে দিয়েছে। যেমন-

“বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের তৃতীয় একদিনের আন্তর্জাতিকটি উত্তেজনা হারাচ্ছিল। এরই মধ্যে আফগানিস্তান সাতটি উইকেট হারানোয় এবং জয়ের লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে থাকায় বিজয়ের ক্ষণ গুনছেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা। রাত ন’টা বাজতে কয়েক মিনিট বাকী আছে। উনত্রিশতম ওভারের একটি বল করতে ছুটে আসছেন তাসকিন আহমেদ। টেলিভিশনে যারা খেলাটি উপভোগ করছিলেন, তারা দেখলেন, তাসকিন বল ছুড়বার মুহুর্তেই অপর প্রান্তে থাকা আফগান ব্যাটসম্যান রশিদ খান হাত তুলে তাকে থামালেন।”
এরপর বিবিসি বাংলা লেখে,

“তারপরই টিভি ক্যামেরা ঘুরে গেল, মাঠের ভেতরে থাকা বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার পানে ছুটতে থাকা এক ব্যক্তির দিকে।স্পষ্টতই তিনি খেলোয়াড় নন।

তিনি কোন কর্মকর্তা কিনা, পোশাক দেখে বোঝা যাচ্ছিল না।

কিন্তু এর পর ওই ব্যক্তিটি যেটা করলেন তা অভাবনীয়।”

কালের কণ্ঠ লেখে,

“তারপরই টিভি ক্যামেরা ঘুরে গেল, মাঠের ভেতরে থাকা বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার পানে ছুটতে থাকা এক ব্যক্তির দিকে। স্পষ্টতই তিনি খেলোয়াড় নন। তিনি কোন কর্মকর্তা কিনা, পোশাক দেখে বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু এর পর ওই ব্যক্তিটি যেটা করলেন তা অভাবনীয়।”
 
বিবিসি বাংলা লিখেছে,

“ব্যক্তিটি ছুটে গিয়ে মাশরাফিকে জড়িয়ে ধরলেন।

মাশরাফিও কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তাকে জড়িয়ে ধরলেন।

ততক্ষণে সেখানে পৌঁছে গেছেন নিরাপত্তা কর্মীরা।

তারা মাশরাফির ওই ‘পাগল’ ভক্তকে ছাড়িয়ে নিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু হাত তুলে তাদের ঠেকালেন মাশরাফি।”

কোনো পার্থক্য রাখেনি দৈনিক কালের কণ্ঠ-

“ব্যক্তিটি ছুটে গিয়ে মাশরাফিকে জড়িয়ে ধরলেন। মাশরাফিও কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তাকে জড়িয়ে ধরলেন। ততক্ষণে সেখানে পৌঁছে গেছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। তারা মাশরাফির ওই ‘পাগল’ ভক্তকে ছাড়িয়ে নিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু হাত তুলে তাদের ঠেকালেন মাশরাফি।”

বিবিসি বাংলা লিখেছে,

“আরো কিছুক্ষণ ‘স্বপ্নের’ নায়ককে জড়িয়ে থাকার সুযোগ পেল ভক্ত।

তারপর মাশরাফি তাকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন মাঠের বাইরের দিকে।

তখনো নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ধরতে গেলে হাত তুলে তাদের ঠেকালেন এবং কিছু একটা বললেন।

সম্ভবত বললেন, আমার এই পাগল ভক্তটিকে কিছু বলবেন না।”

কালের কণ্ঠ লিখেছে,

“আরো কিছুক্ষণ ‘স্বপ্নের’ নায়ককে জড়িয়ে থাকার সুযোগ পেল ভক্ত। তারপর মাশরাফি তাকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন মাঠের বাইরের দিকে। তখনো নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ধরতে গেলে হাত তুলে তাদের ঠেকালেন এবং কিছু একটা বললেন। সম্ভবত বললেন, আমার এই পাগল ভক্তটিকে কিছু বলবেন না।”

এরপর কালের কণ্ঠ সংবাদটির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে শুধু। ভয়াবহ! এক কথায় ভয়াবহ! নিন্দনীয় নয় কি? দেশের মূলধারার একটি দৈনিক এরকম করলে সাংবাদিকতার মান যায় কোথায়?

বিবিসি বাংলার খবরের স্ক্রিনশট
বিবিসি বাংলার খবরের স্ক্রিনশট-১
বিবিসি বাংলার খবরের স্ক্রিনশট
বিবিসি বাংলার খবরের স্ক্রিনশট২
কালের কণ্ঠের নিউজের স্ক্রিনশট
কালের কণ্ঠের নিউজের স্ক্রিনশট-1
কালের কণ্ঠের নিউজের স্ক্রিনশট
কালের কণ্ঠের নিউজের স্ক্রিনশট-2

সংবাদটির লিংক/বিবিসি বাংলা

সংবাদটির লিংক/কালের কণ্ঠ

কালের কন্ঠের নকল এই সংবাদ তখন পর্যন্ত ফেসবুকে শেয়ার হয়েছে ঊনিশ হাজার বার!
Next Post

মিডিয়া ওয়াচ: একই সাক্ষাৎকারে চারবার ছবি কেন?

একই সাক্ষাৎকারে চারবার ছবি কেন? বাংলা ট্রিবিউন অনলাইন পত্রিকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মোবাইল কোম্পানি এয়ারটেলের চিফ সার্ভিস অফিসার রুবাবা দৌলার একটি সাক্ষাৎকার ছাপে। প্রশ্ন হচ্ছে, সাক্ষাৎকারে রুবাবা দৌলার ছবি চারবার ব্যবহার করার কী যুক্তি থাকতে পারে? মারা গেল যে তাঁর কথা শিরোণামে নেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ১৬ অক্টোবর কক্সবাজারের উখিয়ায়। […]
মিডিয়া ওয়াচ